কুট্টিকালে... 

তখন ক্লাস ফোরে পরতামফজল স্যার আইসা ক্লাসের সবতেরে  জিগাইল আমাগো এইম ইন লাইফ সম্পর্কেআহা মনের মধ্যে ধড়ফড়ানি... কামান চাইলে পিস্তল পাওয়া যাইবো এইডা মনেলয় আম্রা তখন থিকাই জান্তামলক্ষ্য নির্ধারণে আমাদের মধ্যে কোন রকমের কিপটামি ছিল নাযতটুকু স্মরনে আছে... কেউ পাইলট কেউ এঞ্জিনিয়ার বা কেউ ডাক্তার ছাড়া তো অন্য কিছুই হমুইনালক্ষ্য ফাইনালদুনিয়া যা মনেলয় তাই হউকআর ধারাবাহিকতায় আজকে আমরা দেখি জাতীয় পঞ্চবার্ষিক উচ্চভিলাষী পরিকল্পনা... যার ৫০% ও কখনো বাস্তবায়ন হয় না ;)সুন্দর না?

যা কইতেছিলাম... 
তখন আম্রার কাছে নজরুল ভাই (সৈয়দ দেলগীর) এর নাটক বানানি ভাস্কর দার (জামাল ভাষ্কর) বিজ্ঞাপন নির্মাণ অথবা মাসুম ভাইয়ের (শওকত হোসেন মাসুম) সাংবাদিকতার কোন বেইল আছিলো? এইসব ধইঞ্চা প্রফেশনতখন ভাব্তাম এইসব ক্যান রাখছে? বন্ধ কৈরা দ্যায়না ক্যান? যত্তোসব... 

আর এখন? 
আমি হালায় টাইপিস্ট হৈছিসারাদিন বৈসা বৈসা টাইপাইকিয়ের পাখির মতো ডানা উড়াইয়া আকাশে উড়াল দেওন... কোন কিছু আবিষ্কার এর নেশায় বুদ হয়ে থাকা অথবা মানব সেবার লক্ষ্য নিয়ে গ্রামে গঞ্জে অবস্থানরত মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় ব্রত হওয়াআসলে এটা কি স্বপ্নের সাথে বাস্তবতার অমিল? নাকি আম্রা আবেগী জাতী হওয়াতে একটু বেশী আবেগ দিয়ে ফেলি? বুঝিনা ক্যান সব কিছু বস্তবতার সাথে যায় না... :(

১/১১ লৈয়া আমরার লগে নতুন প্রজন্মের আশাবাদী তরুণ্রা অনেকেই তর্ক কর্ছেএটা দোষের কিছু নাতাগো ধারণা আছিল যে, দুর্নীতি মুক্ত নতুন সমাজভাইয়ার আদাব লেহাজে অতিষ্ঠআম্রা পুরাতন জেনারেশন অতীত অভিজ্ঞতায় কিছুইযে হৈপে না সেইটা স্বাভাবিক জানতামকিন্তু যারা এরশাদ অথবা তারো আগের সময়কাল দেখে নাই তারা এরম হইপে এটা ভাবতেই পারে নাইচাইছিলাম আমাগো অভিজ্ঞতা যেন মিথ্যা হয়কষ্ট পাইলাম নতুন প্রজন্মের সেই স্বপ্ন ভঙ্গ আবার দেক্তে হৈল বৈলা 

আসলে যেটা বলতে চাই... 
বড় আশা নিয়ে শুরু হয়েছিল দুর্নীতি বিরোধী অভিযানকত ধরনের ফর্মুলার আম্রা দেখলামমাইনাচ ওয়ান... মাইনাচ টু... আবার ঘুইরা হৈল পিলাচ টুঅবশেষে ভাইয়ারা মুক্তআচ্ছা কেউ কি বলতে পারেন এসবের কি দর্কার ছিল? দুর্নীতি মুক্ত সমাজ গঠনের স্বপ্ন ভেঙ্গে যাওয়া এই দুঃখী মানুষ গুলোর কি অন্যায় ছিল? 

হায়... এখন নির্বাচন কমিশন আগের ভুলের জন্য বিম্পির কাছে সরি বলেঅবসর প্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা, প্রাক্তন বিচারপতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত অধ্যাপক সকলেই রাজনৈতিক দলগুলোর তল্পিবাহকআম্রা ম্যাঙ্গো পিপল আসলেই বড় দুই দলের কাছেই শেষ পর্যন্ত জিম্মিযাওয়ার আর কোন যায়গাও নেই :(

এখন পত্রিকা খুলে দেখতে হয় যুদ্ধাপরাধীর সাথে একত্রে বসে ইফতারে কোন সমস্যা নেইএর পর মেজাজ ঠিক রাখি ক্যাম্নে? নাইলে বাথরুমে পা হড়কে পড়ে যায় কেউ একজন... তার লাইগ্গা ক্যান জীবন দেয় ব্যবসায়ী? ক্যান সাফার করে দেশ? এর চাইতে কুৎসিত দৃশ্য আর কি হতে পারে? আমি আর এই দেশ নিয়ে কোন স্বপ্ন দেখি না 

ফিরে আসি আমার সেই স্যার এর কাছে... স্যার আমরা অনেক কিছু হতে চেয়েছিলাম... কিন্তু কিছুই হ্ওয়া হলোনা... আর তাই আমার ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য এইম ইন লাইফ নির্ধারণ করে দিচ্ছি... ওরা যেন বলতে পারে বড় হলে আমি দুর্নিতিবাজ হবো... 

কেউ জিজ্ঞেস করলে এটা যেন বলে :(

গভীর অন্ধকার রাতের এক নির্জন প্রান্তর সেখানে এক নদীর পারে অন্ধকারে ফেলে রেখে গেছে এক তরুণী গৃহবধুর লাশ আর তাঁর পাশে তার ছোট্ট সন্তান সারারাত মৃতা মায়ের দেহে হামাগুড়ি দেয় , দুধ খেতে চায় , কাঁদে ... আর অজান্তেই অপেক্ষা করে নিশ্চিত মৃত্যুর


তবু এই শিশুটি অন্ধকার রাতের হিম মৃত্যুর হাতছানিকে অস্বীকার করে বেঁচে গেছে কিন্তু শিশুটি অসুস্থ , নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে প্রচন্ড শীতের রাতের উলঙ্গতায়
---------------------------------------------------
সময় কথাবার্তা বলার নয় , সময় হচ্ছে একশনের
ঘটনার এখানে তিনটি ভাগ :

. শিশুটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করা
. হত্যাকান্ডের বিচার নিশ্চিত করা
. শিশুটির অনাগত ভবিষ্যতকে সুরক্ষিত করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করা


. শিশুটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করা :

প্রায়োরিটি এটাই উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে বড় শহরে নিয়ে আসা প্রয়োজন যুক্তিযুক্ত হচ্ছে সিলেটে নিয়ে আসা যদি সম্ভব হয় শিশুটিকে সিলেট বিভাগীয় সদরে নিয়ে আসা, তাহলে তাঁর চিকিৎসার যাবতীয় বন্দোবস্ত করতে চেষ্টা করা


. হত্যাকান্ডের বিচারের ব্যবস্থা করা :

এখানে সাংবাদিক বন্ধুদের সহযোগীতা কাম্য এই উদ্যোগে আপনাদের জোরালো সমর্থন কামনা করছি আপনারা যদি সাহায্য করেন , তাহলে ফলোআপের মাধ্যমে নিশ্চয়ই বিচার নিশ্চিত করা যাবে কোন আইনজীবি এনজিওকে কি সংশ্লিষ্ঠ করা সম্ভব , একটু চেষ্টা করে জানাবেন প্লিজ

. শিশুটির ভবিষ্যত নিশ্চিত করা :

এতো ছোট বাচ্চাকে সরকারী শিশু সদনে নেয়ার ব্যবস্থা নেই সম্ভবত: বছর বয়েস হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে পুনর্বাসন জরুরী

সেক্ষেত্রে কী করা যায় ক্লিয়ার না শিশুটিকে দত্তক দেবে না তার পরিবার , কারন বাবা জীবিত আছে , উভয়পক্ষের পরিবার জীবিত আমরা কি এই শিশুর স্পনসর হতে পারি না ?

ধরুন প্রত্যেকে একটা টোকেন মানি দিলাম প্রতি মাসে শিশুটির জন্য এক হাজার টাকা খরচ ধরলে, বছরে বারো হাজার টাকা; পাঁচ বছরে মাত্র ষাট হাজার টাকা যাদের সাধ্য একটু বেশি আমরা ধরুন দুইমাস বা তিন মাসের স্পনসর হলাম প্রত্যেকে অথবা আরেকটু বেশি যাদের সাধ্য তারা হাজার টাকা দিয়ে মাসের স্পনসর হলাম যাদের সাধ্য একটু কম , তারা দুইজন মিলে এক মাসের স্পনসর হলাম অথবা পাঁচজন মিলে একহাজার টাকা দিলাম , একমাসের স্পনসর হিসেবে ভেবে দেখতে পারেন সবাই




নির্বাক জনি





জনির নানি সিতারা বেগম