দিনগুলি বড্ড বেশী ছকেবাধা। ৯টা ৫টা জীবন। আর ভাল্লাগেনা। ইদানিং চাওয়া পাওয়ার হিসাব বড্ড বেশী গোলমেলে মনে হয়। ভালো না লাগার এটাও বোধহয় একটা কারণ। সিগারেটে সুখ টানটা দিয়ে ফেলতে ফেলতে ঠিক করে ফেল্লাম। জাম্পেশ আড্ডা হবে। ওয়েদারটাও জশিলা। রুহানামার প্রস্তাবনায় ওর বাসায় বসার স্থান নির্ধারীত হলো। দুপুরে খাওয়ার পাট চুকিয়েই বেরোব বলে ভাবছি। পথেই জনি কে তুলে নিবো। রিং দিলাম। উফফ্... এই বয়সের পোলাপাইন কত্ত ভ্যারাইটিজ ওয়েলকাম টিউন ইউজ করে... আর কি বোরিং একঘেয়ে টিইইইইট টিইইইইট। যত্তোসব। আরে বাপ ফোনটা ধর। ঘুমাচ্ছে নাকি? শালা... সবি ফোন কোম্পানীর নাইটবার্ড এর সাইডএফেক্ট।

ছুটলাম ১৪ নম্বর রোডে রুহাইনামার বাসায়। রুহান আর আমি।

রুহান এর সাথে রুহাইনামার এ্যাফেয়ার বড়জোর বছরখানেক হবে হয়তো। এক বছর অনেক লম্বা সময়। পুরো ৩৬৫টা দিন। অনেক কাঠখড় পেরিয়ে আজ ওরা একসাথে। ভালো লাগছে দুটো সুখি মুখ দেখতে। হালকা নাস্তার পর শুরু হলো লুডু খেলার প্রতিযোগীতা। আমি আর রুহায়নামা। অপরদিকে রুহান আর মনীষা। র্ফাস্ট ডিল তিন... রুহান পাঁচ... রুহায়নামা ছক্কা ... ওয়াও... প্রচন্ড চিৎকারে ঘর ফাটানোর উপক্রম। উহ শিট্। পর পর তিনবার ছক্কা। বেচারীর জন্য মায়া হলো। হা.. হা.. হা.. চেহারাটা যা হয়েছে। টিপ্পনি কাটা যাচ্ছেনা আমার পার্টনার বলে। জমজমাট ভাব চলে আসলো কিছুক্ষনের মধ্যেই। রুহানটাকে নিয়ে আর পারা গেল না। এত্ত চুরি করে... বয়স হইছে এইবার একটু ভদ্র হ.. না তার আর জো নেই। আর রুহায়নামা? সে আবার উল্টা। কোনভাবেই সে রুহান এর কোন গুটি আউট করবে না। পাছে রুহান মনে কষ্ট পায়। কত্ত পিরিত... যথারীতি কিছুক্ষনের মধ্যে আমরা চিৎপটাং। রুহায়নামার চোখ চিক চিক করতেছে খুশিতে। মনে হলো সেই জয়ী হইছে... রুহান নয়।

খেলা শেষ। ছাদে উঠলাম। কি হয়েছে আজ আকাশটার? হঠাৎ হঠাৎ পৃথিবীকে অন্ধকার করে কাঁদছে ক্যান? আচ্ছা আকাশটা এত কান্না কোথায় লুকিয়ে রাখে? একটু পর পর এভাবে ডুকরে কেদে ওঠা। নিজের মধ্যেই ভাংচুর। প্রচণ্ড একটা কালবৈশেখী ঝড়ের বড্ড বেশী প্রয়োজন আজ। ভেঙ্গেচুরে তছনছ করে দিয়ে যাক সব কিছু।

ইটের পরতে পরতে বুনব নতুন আকাশ। নীল আকাশ। যেখানে উড়বে সাদা মেঘের ভেলা। বিনির্মীত হবে সোনালী স্বপ্ন। ফেলে আসা সকল কান্নাকে ঝেড়ে ফেলে সুখ সুধা অবগাহনে এমন একটা স্বপ্নীল আকাশ আজ বড্ড বেশী প্রয়োজন।

৭৮৬
...:: এলাহি ভরসা ::...
যাও পাখি বলো তারে
সে যেনো ইমেইল করে

পরিবার..ক্যারম আছো? শইলডা বালা? আহারে... খাটতে খাটতে আমার বউডার গতরডা এক্কেবারে (ওয়ার্ড খুইজ্যা পাইতাছিনা) ... এত্তো ব্যস্ত থাকো যে সোয়ামীর একদণ্ড খবরও লইতো পারো না... বিয়ার পর ও কি এরম হইবোনি? তাইলে তো দিলে বহুত চোট পামু... তাইলে বাচুমনারে জা-আ-আ-আ-ন-ন-ন-ন...

তেতুল পাতা তেতুল পাতা তেতুল বড় টক
বন্ধুর লগে কইতে কথা আমার বড় শখ

বালো বাসো কিনা বাসো সখি টেরাই করো আমারে... আমি বালো বাসি তোমারে... কি বুজলা? তুমি আমার সোনার চান পিতলা ঘুঘু... আমার দিল খুস বেগম... তুমি আমার আন্দার রাইতের চান্দের আলো (নাকি এইখানে মোমবাত্তি হইবো??)... সখিগো তোমার বিহনে আমিতো এক্কেবারে ঝুইল্যা (হ্যাং) যামু... আমারে তুমি গাছে উডাইয়া মই-ডা সরাইয়া লইয়া যাইওনা কইলাম...

ও স্ত্রী (আয়রন).. হোনো... টাইম মতো খাইবা... জানি তোমার বিতরে অহন উথাল পাথাল... তাও.. নিজের দিকে ইট্টু খেয়াল রাখবা... আর হোন... বেগানা পুরুষ পোলা যানি তোমার দিকে না চায়... তাইলে আমি কলাম উই ফকিন্নির পুতের চক্কু তুইল্যা ফালামু... আমার পরিবারের দিকে চোক তুইল্যা চাইবো তো ... খবর কইরা ছাড়মু... যাউকগা... তুমি বালো থাইক্যো... ঠিক আছে? আর আমারে তোমার দিলের কতা খুইল্যা লেখবা... বুজছ? অহন তাইলে রাখি?

ফ্যানের পাখা লরেচরে
তোমার কতা মনে পড়ে

রিপোর্টটা এখনো শেষ হচ্ছে না। কখন যেন বস ডেকে বসে। একটু অস্বস্থিতে আছি। কিছু ব্রাঞ্চের রিপোর্ট সম্ভবত মিস হইসে। না হলে প্রায় ১০ কোটি টাকার সেভিংস কমলো কিভাবে? তিন হাজার এর উপরে ব্রাঞ্চ। কোনটা কোনটাতে যে প্রবলেম হলো খুজতো গিয়ে এই শিতাতপ নিয়ন্ত্রিত অফিসে বসেও ঘামছি। রুহায়নামা এসে উপস্থিত।

ভাইয়া একটু বসি?

কম্পিউটার স্ক্রিন থেকে চোখটা না তুলেই বলি ’উমম’

ঃ কি খবর রুহাইনামা?

ঃ ভাইয়া... নিজের উপর ঘেন্যা ধরে গেছে। আমি চমকাই। রিভলভিং চেয়ারটাকে ওর মুখোমুখি করি। জিজ্ঞেস করি...

ঃ কাল রাতে কি খুউব ঝগড়া হয়েছে? চেহারার এই অবস্থা করেছো কেন?

ঃ ভাইয়া ও আমাকে কনটিনিউ ট্রেস করতেছে।

ঃ কিভাবে?

ঃ আমি কখন কোন এলাকায় থাকি সব ও ওর বন্ধুর মারফত জেনে যাচ্ছে। ব্যাপারটা আমার কাছে বিশ্রী লাগতেছে। ও আমাকে সন্দেহ করতেছে। আমি তো পুরা হতভম্ভ।

ঃ কিভাবে ট্রেস করছে? কাউকে কি তোমার পেছনে লাগিয়েছে?

ঃ হ্যা ভাইয়া। আপনি তো জানেন-ই যে আমি বাংলা লিংক ইউজ করি।

ঃ তো?

ঃ ওর এক বন্ধু আছে বাংলা লিংক এ... আমি কখন কোন টাওয়ার এর কাছা কাছি আছি সব ওকে জানিয়ে দিচ্ছে।

আমি আসলে কি জিজ্ঞেস করবো বুঝতেছিনা

ভাইয়া .. ও আমকে জিজ্ঞেস করেছে আমি ন্যাম ফ্লাট এ ক্যান গিয়েছি? ভাইয়া সত্যি আমি ন্যাম ফ্লাট এ যাইনি। আমি রাজা বাজার এর এই মাথায় সিঙ্গার এর শোর রুম এ গিয়েছিলাম একটা এসি দেখার জন্য। এইযে দেখেন ব্রোসিওর। কিন্তু ও বিশ্বাস করতেছে না। ভাইয়া এটা আমার প্রচণ্ড ইগোতে লাগছে। ওর সাথে আমার পক্ষে আর কনটিনিউ করা পসিবল না। ভাইয়া আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। উফফ্... আর পারা গেলনা এই দুইজনকে নিয়ে। দেখি দুইজনকে নিয়ে আবার বসতে হবে।

ব্যানসনটা এইবার ছাড়তেই হইবো। একটু কড়া কড়া লাগতাছে দিন কয়েক যাবৎ। বুকটায় মাঝে মাঝে চিন চিন কইরা ওঠে। এইটা আসলে কিসের আলামত বুঝতাছিনা। অনেক দিন হইয়া গেল এই ব্রাণ্ডটায়। বদলাইলে ক্যারম হয়? কিন্তু এরপর? ওই মানের তো আর কাউরে দেখতাছি না এই মুহুর্তে। ব্যানসন লাইট কয়দিন টাইনা দ্যাখা যাইতে পারে। এই দিকে অফিস কইয়া দিছে.. বিড়ি টানলে চাকরি থাকবোনা। কথাডা মনে হইলেই মেজাজ খিচরে যায়। যত্ত সব। রুটিরুজি দেইক্যা কিছু কইতেও পারিনা। অফিসের চৌহদ্দি ছাইড়া দুরে যাইয়া বিড়ি টাইন্যা আসি গজড় গজড় করতে করতে।

এইদিকে শালার বারটেন্ডার স্ক্র-ড্রাইভার থিকা দুরে আছে বহুত দিন হইয়া গেল। তার গার্ল ফ্রেন্ড এহন দ্যাশে। তারে দৌড় এর উপর রাখছে। দুষ্ট পোলাপাইন পাছে মুখ টিপে হাসে। ব্যাচারা। অফিস ... জিএফ ... বাসা ... কত্তকি... । মাঝে মাঝে খ্যাপতে খ্যাপতে আইয়া কইবো ‘বস... এইভাবে তো চলে না... আর কত? স্যাক্রিফাইস করতে করতে তো নিজেই স্যাক্রিফাইস হইয়া গ্যালাম’ আমি হাসি। পোলাপাইন। পিঠে হাতবুলাইয়া কজে মনোযোগী হইতে কই। আবার নতুন উদ্যোমে ডেটিং, নতুন উদ্যোমে ঝগড়া। হাহাহাহা

অফিসটার পেছনদিকটায় বিশাল একটা খেলার মাঠ। মহল্লার পোলাপাইন রেগুলার ক্রিকেট খ্যালে। জাতীয় দলে ডাক পাওনের আশার অবিরাম পরিশ্রম। মাঠটার ঠিক ওই পারেই ফাষ্টফুডের দোকানটা। এইটা আসলে একটা চা এর দোকান। আমি নাম দিছি আমাগো ফাষ্টফুড। এইখানে নিয়মিত চা খেতে আসি। ভিতরে বইসা একটা আয়েশ কইরা বিড়ি ধরাই। ইদানিং ফাউজিয়াও আমার সাথে যোগদিছে চা খাওয়ার লাইগ্যা। নিচ থেকে ১১:৩০তে ফোন করবো। ‘ভাইয়া নামেন। চা খাওয়ার সময় হইছে।’

আসলে যতনা আমারে চা খাওয়ানোর জন্য ডাকা তার চাইতে বেশি হইলো ওর বিএফরে একনজর দ্যাখা। বিএফ আবার সিসটেম ইঞ্জিনিয়ার। এই পোলাটা আমার খুউব ভক্ত। আমি চা খেতে নামলে ওরে লগে লইয়াই নামি। এই দুইটারো একি সমস্যা। সারাদিন ঝগড়া করবো। দুই পক্ষেরই বিস্তর নালিশ। ‘ও অমুক পোলার লগে কথা কইছে’ ‘এ অমুক মাইয়ারে এসএমএস করছে’। এক্কেবারে হুদা মিছা ঝগড়া।

ভালোই লাগে এই দুইজনের ঝগড়া দ্যাখতে। পিড়িত কিন্তু কম না। একজন আর একজনরে না দেইক্যা থাকতে পারে না। খুউব ভালো লাগে যখন দেখি ঝগড়া কইরা দুইজন দুইজনের চুল টানাটানি শুরু করছে। হাহাহাহা... দুইটাই পুরা পাগোল। হা... হা... হা... হা... হা... হা... হা... হা... হা... হা... হা... হা... হা... হাসতে হাসতে চোখে পানি চলে আসে। ভালোবাসাটা আসলেই একটা পাগলামি.. তাই না? একটু হাসি ... একটু কান্না... একটু অভিমান... একটু খুনোসুটি... একটু ঝগড়া... আবার গলাগলি... ব্যাস্ততার কারনে না দেখার সময়টাতে দুজন দুজনকে প্রচণ্ড ভাবে মিস করা। পরবর্তী সময়ে আবার নতুন করে নিজেদের আবিস্কার। হৃদয়ের অনুভুতি চোখে জলধারায় প্রকাশ।

বাঁচবো যতদিন ততদিন আমি
মনে রেখ ভালোবেসে যাবো তোমাকে
বিশ্বাস করি আহা ভালোবাসা দামি
সেই ভালোবাসা তুমি দাও আমাকে
এই বুকে রেখেছি আমি তোমাকে
রেখেছি চোখের তারায়

মনটা খারাপ হইয়া গেল...

কখনো আমার মা কে গান গাইতে শুনিনি
সেই কবে শিশু রাতে ঘুম পাড়ানির গান গেয়ে
আমাকে কখনো ঘুম পাড়াতেন কিনা আজ মনেই পরেনা......

শামসুর রহমানশামসুর রহমান এর কথাটা একদম সত্যি... আমিও আমার মা'কে কখনো গান গাইতে শুনিনি...

তার এই সময় কোথায়? সব সময় আমাদের নিয়েই ব্যাস্ত থাকতো... তবে আমার মা গান শুনতো... আমার দিনের শুরুটা হয় মা এর ডাকে... 'টুটুল, ওঠ... ৭টা বাজে, অফিসে যাবি না?... ' জীবনের পরতে পরতে জড়িয়ে আছে আমার মা... সন্তানকে আর কে এমন ভাবে ভালোবাসতে পারে? কেউ না... কেউ না... এত্ত নিঃস্বার্থ ভালোবাসা আর কেউ দিবে না...

পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর ও সবচেয়ে বেশী উচ্চারিত শব্দটি হলো মা... আর এই মা কেই আমরা শুধু একটি দিবসে বন্দি করে ফেলছি... এটা ঠিক না - এটা ঠিক না।

পৃথিবী জুড়ে পালিত হচ্ছে মা দিবস... এর পিছনে যতটা না মা'র জন্য ভালোবাসার প্রকাশ থাকে.. তারা চাইতে বানিজ্যিক করাণটাই বেশী শক্তিশালী মনে হয়...

তবুও আমি এই গতানুগতিকতা ভেঙ্গে ফেলতে চাই না... যারা শুধু মাত্র এইদিন মা কে মনে করেন... তাদের জন্য আমার দুঃখ হয়... ঘরে এবং বাইরের পৃথিবীর সকল মা, মা'র সন্তানেরা সুখে থাকুক... শান্তিতে থাকুক... যেখানে আমার মায়ের সুখ নিহিত... মা তোমাকে আমি সবচাইতে বেশী ভালোবাসি... ভালো থাকো আমার মা জননী...

কখনো আমার মা কে গান গাইতে শুনিনি

সেই কবে শিশু রাতে ঘুম পাড়ানির গান গেয়ে

আমাকে কখনো ঘুম পাড়াতেন কিনা আজ মনেই পরেনা......



শামসুর রহমানশামসুর রহমান এর কথাটা একদম সত্যি... আমিও আমার মা'কে কখনো গান গাইতে শুনিনি...



তার এই সময় কোথায়? সব সময় আমাদের নিয়েই ব্যাস্ত থাকতো... তবে আমার মা গান শুনতো... আমার দিনের শুরুটা হয় মা এর ডাকে... 'টুটুল, ওঠ... ৭টা বাজে, অফিসে যাবি না?... ' জীবনের পরতে পরতে জড়িয়ে আছে আমার মা... সন্তানকে আর কে এমন ভাবে ভালোবাসতে পারে? কেউ না... কেউ না... এত্ত নিঃস্বার্থ ভালোবাসা আর কেউ দিবে না...



পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর ও সবচেয়ে বেশী উচ্চারিত শব্দটি হলো মা... আর এই মা কেই আমরা শুধু একটি দিবসে বন্দি করে ফেলছি... এটা ঠিক না - এটা ঠিক না।



পৃথিবী জুড়ে পালিত হচ্ছে মা দিবস... এর পিছনে যতটা না মা'র জন্য ভালোবাসার প্রকাশ থাকে.. তারা চাইতে বানিজ্যিক করাণটাই বেশী শক্তিশালী মনে হয়...



তবুও আমি এই গতানুগতিকতা ভেঙ্গে ফেলতে চাই না... যারা শুধু মাত্র এইদিন মা কে মনে করেন... তাদের জন্য আমার দুঃখ হয়... ঘরে এবং বাইরের পৃথিবীর সকল মা, মা'র সন্তানেরা সুখে থাকুক... শান্তিতে থাকুক... যেখানে আমার মায়ের সুখ নিহিত... মা তোমাকে আমি সবচাইতে বেশী ভালোবাসি... ভালো থাকো আমার মা জননী...

আমার সারাটা দিন..
মেঘলা আকাশ
বৃষ্টি
তোমাকে দিলাম
শুধু শ্রাবন সন্ধ্যাটুকু তোমার কাছে চেয়ে নিলাম

অথবা..

বৃষ্টি পড়ে পড়ে মধুর দানা.. ......

খুউব ইচ্ছে করতেছে গান শুনতে .. অফিস ...

ঝম ঝম বৃষ্টি.. আঝোর ধারায়.. অদুরেই কৃষ্ণচুড়ার লাল হয়ে যাওয়া... জানান দিচ্ছে তার প্রেমময় উপস্থিতি.. পর্দাটা সরিয়ে .. শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে দেখতে ভালই লাগছে.. একটা নষ্টালজিয়া..আহা .. কত্ত স্মৃতি.. ফেলে আসা দিন.. সময়.. ঘটনা..

খুউউব ইচ্ছে করছে ভিজতে... (যতাটা না ভিজার... তার চাইতে বলতে ভালো লাগছে) কিন্তু একটা ঝামেলা.. অতিরিক্ত ড্রেস নেই সাথে... অফিসে থাকতে হইবো সমস্তদিন.. আর সবে মাত্র সকাল... আরো একটা ঝামেলা আছে.. ভিজতে গেলে ক্যামন শীত শীত লাগে.. আর একটু পর .. বৃষ্টিটা থামলে নিচে নামব... বিড়ি খেতে যাবো..সাথে গরুর দুধ-এর চা.. বোনাস ওয়ারীদের রিসিপশনটাকেও একঝলক দ্যাখা...

প্রচণ্ড ভালোলাগার সময়টার জন্য আমি অপেক্ষা করছি.. বৃষ্টির পরের মুহুর্তটা .. বাতাসের গণ্ধটায় ক্যামন একটা মাদকতা.. চারিদিক ঝক ঝকে তকতকে .. পবিত্র পবিত্র একটা অনুভুতি.. আমি মিস করি.. আমি ফিল করি.. হৃদয়ের গহিন থেকে.. আমার সবচাইতে প্রিয় সময়টার জন্য...

কি যেন নাই.. .. ক্যামন যেন খালিখালি লাগতাছে.. .. ক্যান লাগে? যান্ত্রিক নির্ভরশীলতা?.. .. কেটে যাচ্ছে দিন, রাত.. (কিন্তু রক্ত বের হচ্ছেনা).. .. আহা কেউ খুজে পায় না.. .. কস্টে আছে আইজুদ্দিন.. ..বিচ্ছিন্ন .. .. জীবন থেকে? তা তো না.. .. তাইলে? কত শুভাকাঙ্খি.. বন্ধু, স্বজন, চেনা-অচেনা .. প্রয়োজন-অপ্রয়োজনে.. হাসিতে-কান্নায়.. সুখে-অসুখে.. আহা তোমাদের শুনিনা কত্তদিন.. কত্ত কথা-কথি.. খুনোশুটি.. সকালে ঘুমথেকে জাগিয়ে তোলা থেকে সকল এপয়েন্টমেন্ট মনে করিয়ে দেয়া.. পিয়াজ.. মানে পি.এস... .. আহা কি এক শুন্যতা.. ভেতরটা মোচর দিয়ে ওঠে.. ক্যান এত্ত খালি খালি লাগে?

তুমি না থাকলে সকালটা এত মিষ্টি হতো না
তুমি না থাকলে মেঘ করে যেত বৃষ্টি হতো না
তুমি না থাকলে মন কষাকষি..
করে হাসাহাসি নাক ঘষাঘষি
তুমি না থাকলে চাঁদটার গায়ে পরে যেত মরচে
তুমি না থাকলে কিপ্টে লোকটা হতো না খরচে
তুমি না থাকলে স্বপ্নের রং হয়ে যেত খয়েরি
অঞ্জন দত্তের এইগানটা খুব মনে পড়ছে

ছোট্ট এই পৃথিবীটা.. আমার হাতের মুঠোয়.. আর এখন? কেউ অফলাইন দেয় “ভালোবাসাকে তিল তিল করে বাচিয়ে রাখতে হয়, এত্তো রাগ ক্যান?”.. কেউ ‘চ’ বর্গীয় শব্দ উৎসর্গ করে আমার উদ্দেশ্য করে.. কেউ বলে ‘শালা ফকিন্নি’.. কেউ আবার অফিসে ক্রিং ক্রিং.. .. ‘পালাবে কোথায়’.. .. আর আমি? হা.. হা.. হা.. এই বেশ ভালো আছি.. নেট ওয়ার্কের বাইরে..

আসলে হঠাৎই মুঠোফোনটা বিদ্রোহ ঘোষনা কইরা বসলো। এর কোন মানে আছে? আমারটা খাইয়া আমার আদর সোহাগে লালিত পালিত বেটার আৎকা বিদ্রোহ.. .. কত্ত বড় সাহস!!! জরুরী অবস্থার এই সময়ে এত্ত সাহস পাইলো কই? কই আমি তো পারি না.. .. বুকের উপর জলপাই আমার গলাটা চাইপ্যা ধইরা আছে.. বন্ধ কইরা দিছে আমার কণ্ঠস্বর.. আমি হাসফাস করি.. .. একটু নিঃশ্বাসের জইন্যে.. .. আর এইদিকে শালার বাঙালি খুশিতে বগল বাজাইতাছে.. .. যত্তোসব

আমার পিচ্চি ভাগনিটার কথা মনে আছে?
[আগের পোস্ট এ দ্রষ্টব্য]
সকালে অফিসে আসার আগে বলতেছিল..

নিশি: মামা, আর একটু পরে যাও না অফিসে..
আমি: লেট হলে অফিস শাস্তি দিবে...
নিশি: তোমাকে কি তাহলে অফিসের বাইরে কান ধরে দাড় করিয়ে রাখবে?
আমি: অপপ্স... ...

ভালো একটা জ্বালায় পরা গেছে...

আমার কি বলা উচিত?

বৃহষ্পতিবার আমাদের অফিস হাফ থাকে...
তো সকালে অফিসে আসার প্রস্তুতি নেয়ার সময় ছোট্ট ভাগনিটা যার নাম নিশি ও জিজ্ঞেস করলো

নিশিঃ মামা তুমি আজ কখন ফিরবে?
আমিঃ আজতো অফিস হাফ তারাতারি চলে আসবো?
নিশিঃ ও আজ তোমার অফিস হাফ হবে? তাহলে কি তুমি আজ ৭ তলায় অফিস করবে?
(উল্লেখ্য আমার অফিসটা ১৪ তলায়)


লাউয়া ছড়া ইকো পার্কের কথা কিছু দিন আগেই শুনেছিলাম... অনেক দিন ঢাকার বাইরে যাওয়া হয়না.. বন্ধুরা বসে প্লান করলাম .. এবার লাউয়া ছড়াতেই যাব.. ঢাকা - শ্রীমঙ্গল.. সোহাগের কাউন্টার.. রাতের জার্নি .. তাই সবচাইতে আরামের ব্যবস্থা নেয়া.. ভলবোর 5টা টিকেট ক্রয় তাও আবার 7দিন আগে.. আমরা 5 বন্ধু.. আমি, ইমন, তুহিন, জিয়া আর নেহাল.. সব প্রস্তুত..

প্রথম ভুলঃ
যাওয়ার 1দিন আগে ইমন বল্লো ... "দোস্ত সোহাগের বাস তো সিলেট যাবে.. শ্রীমঙ্গল যাবে না.. ওইটা আলাদা রুট".. আকাশ ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম.. চারিদিকে খোজ নিলাম.. না কোন ভাবেই সিলেটের বাস শ্রীমঙ্গল যাবে না... অগত্য টিকেট পরিবর্তনে ছোটা.. পরিশেষে শ্যামলী বাসের টিকেট ক্রয়

দ্বিতীয় ভুলঃ
ভেবেছিলাম রাতের বাসে চলে যাই.. যাতে পরের দিনটা ফ্রি থাকে.. ঘুরে কাটাতো পারি.. 11:45 এ বাস স্টার্ট করলো.. মাঝে একটা স্টপেজে কিছু পানাহার.. একটু আড্ডা.. একটু বিড়ি ফুকাফুকি.. অন্য বাসের সুন্দরীদের দিকে আড় চোখে তাকানো... বিরক্তিকর ঘোষনায় আবার বাসে ফেরত... রাত যখন ঠিক 3টা তখন আমাদের বাসের সুপারভাইজার এসে বল্লো শ্রীমঙ্গল চলে এসেছে.. আপনারাই বলেন .. এত্ত রাইতে কই যাই?

বাস থেকে নেমেই একবার বিষম খেলাম। চারিদিকের সুনশান নিরবতা। প্রকৃতির কি কোন আলাদা গন্ধ আছে? সারা গায়ে পরশ বোলানো ঠান্ডা হাওয়া রাতের ক্লান্তি এক নিমিষেই বিলীন। মার্চের এই শেষের দিনগুলোতে হয়তো এইদিকে একটু ঠন্ডা থাকে। রিক্সাওয়ালাকেও দেখলাম জ্যাকেট পরিহিত অবস্থায়।

রাস্তার ধারের একটা খোলা রেস্টুরেন্ট এ কিছুক্ষন বসে/শুয়ে সময় কাটিয়ে... মশার উপদ্রবে টিকতে না পেরে আবার হাটাহাটি। রাতের শ্রীমঙ্গল শহড়... নিরব নিস্তব্দ.. .. রূপোলী চাঁদের বিমোহিত আলো.. একটা ঘোর লাগা মুগ্ধতা.. .. ক্যামন এক নষ্টালজিয়ায় পেয়ে বসছে। সেই কৈশরের দিন গুলো চোখের সামনে। মাঝ রাতের ঢাকা অথবা ফজর নামাজের পর রিক্সা নিয়ে শহরে ঘুরা.. ..

পর্যবাসিত জটিল জীবন.. হাপিয়ে ওঠা যান্ত্রিকতা। দুটো দিন হাতে নিয়ে বেরিয়ে পড়া.. ..। রাতের আধার ধীরে ধীরে পাতিতারি গুটানোর চেষ্টা.. বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছুক্ষন হাটা হাটি .. শ্যামা ঘোষের মিস্টান্ন ভান্ডার খোলা পেলাম রাত্রির এই শেষ ভাগে। খুউব আয়েশ করে ধুমায়িত চায়ের কাপে ছোট ছোট চুমুক দেয়া সেই সাথে ধুম্রশলাকায় চুম্বন। এই সুখ বেশীক্ষন স্থায়ী হলোনা। ইতিমধ্যে জিয়া 2টার রিক্সার ব্যাবস্থা করে ফেলায় গেষ্ট হাউজের উদ্দেশ্যে ছুটলাম .. যদি একটু ঘুমিয়ে নেয়া যায়..

দুইপাশে সবুজ রঙের চাদর বেছানো। চায়ের বাগানের মাঝ দিয়ে আমরা ছুটছি পরিবেশ বান্ধব রিক্সায়। বিটিআরআই'র গেষ্ট হাউস ঢাকা থেকেই বুকিং দেয়া ছিলো। শহর থেকে একটু বাইরে গেষ্ট হাউস। সামনেই বাহারী ফুলের বাগান। ছিমছাম আর চমৎকার ভাবে গোছানো পুরো গেস্ট হাউসটি। আমাদের জন্য নির্ধারিত কক্ষ গুলোতো যার যার ব্যাগ-বগেজ রেখে ফ্রেস হয়ে এসিটা সুপার কুল এ দিয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম। একটু ঘুম দেয়ার অপচেষ্টা। সকালে নাস্তা পর্ব এখানেই ব্যবস্থার জন্য বলা হলো। সকালের সোনালী রোদে বারান্দায় বসেই নাস্তা সেরে.. চা বাগানের আহরিত পাতা থেকে তৈরীকৃত চায়ের কাপে ঠোট ছোয়ানো। সাথে সেই ধুম্রশলাকায় যথারীতি অগি্ন সংযোগ.. আহা.. জীবনটা যদি এভাবেই পার করে দেয়া যেত? কতই না সুখের হতো..

আড্ডার ফাকেই তুহিন মোবাইল ফোনের ক্যারিশমায় মাইক্রোবাস এর ব্যবস্থা করে ফেললো.. মজার একটা বিষয়ও জানা হলো.. এখানে নাকি মাইক্রোবাস কে লাইটাস বলা হয়.. সেটা যেই ব্রাণ্ড/মডেলেরই হোকনা কেন। সত্যিই কি তাই? সব্বাই প্রস্তুত লাউয়া ছড়ার উদ্দেশ্যে.. ...

15 মি. এর মধ্যেই আমরা লাউয়া ছড়া ইকো পার্কের সামনে। প্রবেশ দাড়ে স্কাউটদের সাদর সম্ভাষন.. দুপাশে বিভিন্ন প্রজাতীর গাছের সারি.. .. দাড়িয়ে আছে.. .. দেখে মনে হবে আকাশ ছোয়ার প্রতিযোগীতার সম্মিলন.. .. ইকোপার্কের অফিস কক্ষটা একটু ভেতরে.. 5 মিনিটের চমৎকার পায়েহাটার পথ.. অফিস প্রসেসিং কমপ্লিট.. শুধুমাত্র নাম লেখাতে হয় .. ভিজিটর এর হিসাব রাখার জন্য। সাথে গাইড হিসেবে রায়হান কে সঙ্গে নিলাম। ইউএসএইড এর সহায়তায় রায়হান ইকো গাইড হিসেবে ট্রেইনিং পেয়েছে। ছোট্ট একটা ছেলে। ইন্টারমিডিয়েট এ লেখাপড়া করা অবস্থায় ওর ফ্রি টাইমগুলোতে ইকো গাইড হিসেবে কাজ করে। (সেল # 01718382179)। সবচাইতে বড় ট্রেইলটা আমরা ঘুড়ে দেখার জন্য বেছে নিলাম।

ইকো গাইড রায়হানের সাথে হাটতে হাটতে কথা বলছিলাম.. জানালো ভোর 5/6টায় ইকো পার্কে পৌছতে পারলে .. .. ঝাকে ঝাকে পাখির কলকাকলিতে মুখরিত থাকে ওই সময়। কপাল ভালো থাকলে 2/1টা হরিন ও দেখা যেতে পারে.. রায়হান 2বার দেখেছে। হাটতে হাটতে রায়হানের লাইফের এইম সম্পর্কে জানা হলো .. লন্ডন যাওয়ার অপেক্ষায় .. সেইখানে ওর মামা আছে.. একটা সময় পড়ে ও চলে যাবে.. আচ্ছা বলেন তো তাহলে একসময় সিলেট কারা থাকবে?

কিছুদুর আসতেই রায়হান সব্বাইকে থামতে বল্লো.. মুখে আঙ্গুল দিয়ে ইশশশশ .. সব্বাই চুপ.. বাতাসের এক নাগারে শন শন শব্দ.. রায়হানের দৃষ্টি খুজে খেয়াল করলাম.. দুর দিয়ে অনেক গুলো সাদা বানর আড্ডা দিতেছে.. .. মনে হয় মিস করতেছে ব্লগ এর কাউকে কাউকে.. .. জঙ্গলের ভিতর দিয়ে পা টিপে টিপে কাছে যাওয়ার চেষ্টা করলাম.. .. ব্যার্থ.. আবার পথ চলা অনেক দিন পর এই প্রথম মাটির সোদা গন্ধ পেলাম .. অদ্ভুত এই গন্ধটা আমায় মোহিত করে..

রায়হান আবার থামালো কাঠবেড়ালী দেখার জন্য.. অনেক কষ্টে বেচাড়াকে খুজে পেলাম.. এর মাঝেই 2খান শিম্পাঞ্জিও দেখা গেল.. নেহাল সেল ফোন বের করে দেখে নেটওয়ার্ক নেই.. ওর নাকি বউ এর সাথে শিম্পাঞ্জির কথা বলিয়ে দেয়ার কথা ছিলো.. বেচারার ব্যাড লাক খারাপ..

চারিদিকে সবুজের সমারোহ.. বাতাসের শন শন শব্দ.. ঝাড়া পাতার গালিচা বেছানো পথে আমাদের পথচলায় মুড় মুড় সঙ্গিতের ধ্বনি .. সবুজের মাঝে আমরা হাটছি তো হাটছি.. বনের ভেতর এই প্রথম যাওয়া.. একটা এডভেঞ্চার.. আড্ডাবাজির মাঝে হেটেই চলেছি.. কখনো একটু জিরিয়ে নিচ্ছি .. আবার হাটা শুরু.. মাঝে মাঝে বাশ ঝাড় পরছে .. কিছু আদিবাসি বাশ কেটে মাথায় করে নিয়ে যাচ্ছে অনুমতি সাপেক্ষে.. পথের শেষ দিকে এসে একটা বাশের একটা মাচা পেলাম.. ওইখানে একটু জিড়িয়ে আবার হাটা.. এবার সত্যি আমাদের ক্লান্তিতে পেয়ে বসেছে.. টানা 3 ঘন্টা হেটে ফেলেছি .. আরো 30 মিনিট এর পথ বাকি.. .. বনের এইখানটায় কিঞ্চিৎ নেটওয়ার্ক পাওয়া গেল.. নেহাল আর তুহিন এই সময় বউকে পার্কের আপডেট জানিয়ে.. আবার শুরু হলো ফিনিশিং টাচ..

পাক্কা সাড়ে তিন ঘন্টায় শেষ হলো আমাদের ওয়াক এওয়ে.. জট্টিল হাটা হইলো.. আমরা ইকোপার্কের যেই ট্রেইল ধরে হেটে শেষ মাথায় পৌছলাম সেটা হলো ফুলবাড়িয়া.. এখানে এক ফরেষ্ট অফিসার এর বাসায় পনি পান শেষে বাস এ করে লাওয়া ছড়া ইকো পার্কের মেইন গেইট এ পৌছলাম.. ওইখানে আমাদের লাইটাস অবস্থান করছিলো। গাড়ি ছাড়ার আগে 2জন অপূর্ব সুন্দরী ললনাকে পার্কে প্রবেশ করতে দেখে মনটাই খারাপ হয়ে গেল.. আমরা চলে যাচ্ছি আর তাহারা মাত্রই প্রবেশ করিতেছে.. যত্তোসব...

দুপুরের লাঞ্চ শহরের একটা রেস্টুরেন্টে সেরে আবার ছুটরাম মাধবপুর লেক এর উদ্দেশ্যে। প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার এই নয়নাভিরাম এই লেক। বিকেলে রোদে রুপোলী স্রোত চক চক করছিলো.. গ্রীস্মের পাগল করা বাতাসে দিনের সমস্ত ক্লান্তি এক নিমিষেই বিলীন.. প্রস্তুতি নিয়ে আসার কারনেই লেকে গোসলে নেমে গেলাম.. অনেক দিন পর সাতার কাটলাম .. ডুবাডুবি শেষে ম্যারাথন আড্ডা.. হৈ-চৈ..

সন্ধ্যায় শহরে ফিরলাম ফিরতি বাসের টিকেটের জন্য। টিকেট শেষে দেখতে গেলাম ষিতিশ বাবুর প্রাইভেট চিড়িয়াখানা। খুউবি ছোট্ট পরিসরের এই চিড়িয়াখানা ভালোই লাগলো। এখানে রাখা আছে বিড়ল প্রজাতীর সাদা বাঘ। আরো আছে হরিন, বানর (4 প্রজাতির, বিড়ল প্রজাতীর লাজুক বানর ও এখানে সংগৃহীত), 2টা ভাল্লুক, ডাহুক, টিয়া, ময়না, একটা বড় অজগর সাপ

রমেশ বাবুর বিশ্ব বিখ্যাত নিল কণ্ঠি চা খেতে গেলাম সন্ধার পর। এই চা এর বৈশিষ্ট হলো 5টি লেয়ার (রঙের)। প্রতি কাপ চা 50 টাকা। 4 রঙের চা এর দাম 40, 3 রঙের চা এর দাম 30, 2 রঙের চায়ের দাম 20 আর স্পেশাল চা 10 টাকা। এছাড়াও সর্বন্মি চা এর দাম 5টাকা কাপ এখানে।

অর্ডার দিয়ে যথারীতি বসলাম। রমেশ বাবু যেই ঘরে এই বিখ্যাত চা তৈরী করেন.. সেখানে প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত .. কাউকেই সেখানে সে এলাউ করেন না। চা এর দোকেনে বিশাল আয়োজন মানুষ জনের বাসার জন্য। বড় একটা ঘড় ছাড়াও সামনে খোলা বড় একটা যায়গা নিয়ে চেয়ার বিছানো। পাশেই কার পার্কিং। অনেক গাড়ির ভিড় লক্ষনীয়। রমেশ বাবু মুক্তা গাছার বাসিন্দা ছিলেন। পরে মাইগ্রেন্ট হয়ে এখন শ্রীঙ্গলে। শোনা যায় বৃটিশ সরকার কোটি টাকার বিনিময়ে তার এই চা এর ফর্মুলা কিনতে চেয়েছিলো। কিন্তু রমেশ বাবু হাত ছাড়া করতে রাজী হয়নি। তাকে লণ্ডন গিয়ে এই চা বানাতেও নাকি প্রস্তাব দিয়েছিলো। এই দেশ ছেড়ে কোথাও যাওয়ার তার ইচ্ছা নেই। ভালো লাগলো রমেশ বাবুর দেশ প্রেম দেখে।

রাতে গেষ্ট হাউজে ফিরে যেটা সবচাইতে মন খারাপ করলো .. তা হলো গেষ্ট হাউজে কোন টিভি নেই। ওইদিন ছিল বাংলাদেশ বনাম অস্ট্রেলিয়ার খেলা। অনেক রাত পর্যন্ত বাসায় ফোন করে খেলার খবর জানার চেষ্টা করে একটা কষ্ট নিয়ে ঘুমাতে গেলাম।

রাত 8 কি সাড়ে 8টা হবে। এলিফ্যান্ট রোড। ক্যাব এর জন্য হাত তুলতেই 3টা ক্যাব হাজির। অথচ আগের সময় হলে ক্যাব খালি পাওয়া দুষ্কর ছিলো।

কথা প্রসঙ্গে ড্রাইভার জানালো ... 7টায় সকল মার্কেট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আগের মত পেসেঞ্জার পাওয়া যায়না। প্রতিদিন সে সন্ধ্যা 6টা থেকে রাত 12টা পর্যন্ত ক্যাব চালায়। জমা দিতে হয় 700 টাকা। মার্কেট গুলো তাড়াতাড়ি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রাস্তায় লোক সমাগম কম। তাই তার প্রতিদিন 400/500 টাকা কামাতেই হিমসিম অবস্থা। তার মধ্যে আবার জমার টাকা। কেউ কি বুঝবে এই চালকের অবস্থা?

জলপাই ভাইগণ শরীরের রক্ত নিংড়ানো পরিশ্রমী এইসকল মানুষ গুলোর অবস্থা কি একটু অনুধাবন করার চেষ্টা করবেন? আপনাদের তো ব্যারকে চর্ব্য-চোষ্য-লেহ্য'র কোন অভাব নেই... সেখানেই ফিরুন না দয়া করে... আমরা আমাদের মতো থাকি না হয়...

তারেক রহমান এখন জেল-এ। আরাফাত রহমানকে এ্যরেস্ট এখন সময়ের ব্যাপার। এরপর কে? খালেদা হাসিনাও কি এরেস্ট হবে? শোনা গিয়েছিলো দুই নেত্রীকে দেশের বাইরে পাঠানোর কথা। কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে তা মনে হচ্ছেনা। ফখরুদ্দিনের আড়ালে আসলে কার্যত দেশ পরিচালনায় জলপাই রঙ। স্থবির ফকরুদ্দিন ও তার উপদেষ্টারা অস্বাভাবিক চাপের মধ্যে পরেছেন। ইতিমধ্যে ডিজিএফ তৈরী করছে 2টি দূর্নিতীবাজদের তালিকা। যা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অগোচরেই ঘটছে। আরো তালিকা তৈরীর প্রস্তুতি চলছে। অবস্থাদৃষ্টে প্রতিয়মান যে, গ্রেফতাকৃত দূর্নিতীবাজ রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার সরকারের অগোচরেই ঘটেছে। জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠনের পরিকল্পনার ঘোষনা আসছে বলে শোনা যাচ্ছে। জলপাই রঙ'এর শীর্ষ ব্যক্তিরা এ পরিষদে থাকবেন। ইতিমধ্যে দূনর্ীতি দমন টাস্কফোর্স গঠনের ঘোষনা করা হয়েছে। জলপাই রঙ এর তত্ত্বাবধানে জেলায় জেলায় এই কমিটি থাকবে। পর্দার আড়ালে থেকে দীর্ঘদিন দেশ শাষন করা যাবে না, ভেবেই হয়তো এই নিরাপত্তা পরিষদ গঠন করা হচ্ছে। নিরাপত্তা পরিষদ গঠিত হলে সেনাবাহিনী বেসামরিক প্রশাসনকে খবরদারি করার আনুষ্ঠানিক ক্ষমতা পাবে। এটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্থলাভিষিক্ত হবে বলেই প্রতিয়মান। তাছাড়া আরো একটি কারণ হতে পারে, বিএনপি সমর্থিতদের সম্ভাব্য আন্দোলন ঠেকানো। সেনাবাহিনী প্রধান লেজে মইন ইউ আহমেদ 2008 এর জুন এ অবসরে যাবেন। ধরে নেয়া যায় সেনাবাহিনী তার আগে ক্ষমতা ছাড়ছে না। টেস্ট কেস হিসেবে 2008 এর শেষে উপজেলা নির্বাচন হতে পারে। জাতীয় নির্বাচন হতে পারে 2009 এ। সেনাবাহিনীর নিরব অভু্যত্থান মানুষের মনে যে আশা জাগিয়েছিলো তা ধীরে ধীরে ম্রীয়মান। দূনর্ীতিতে নিমজ্জিত বিনপির এখন অস্তিত্ত্বের সংকটে ভুগছে। এমতাবস্থায় ড. ইউনুস নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষনা কি বিকল্প বিএনপি প্রতিষ্ঠা করার প্রয়াস? সেনাবাহিনীর সহায়তায় কি ইউনুস দলগঠন করবেন? সেটাই এখন দেখার বিষয়।

বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসে একুশের বিশিষদ্বতা সমঙ্র্কে বলুন।ইতিহাসের গতিসঙ্ন্দ আছে, ইতিহাসে ছন্দসঙ্ন্দ আছে। সেই ছন্দ স্পন্দে কিছু কিছু কংত্রিক্রট ঘটনার গুরুত্দ্ব অবশ্যই আছে। প্রথমেই বলা দরকার, যাকে আমরা ভাষা আন্দোলন বলি তার শুরু কিন্তু '52-তে নয়, শেষও '52-তে নয়। ভাষা আন্দোলন নিয়ে কথা বলতে গেলে বাংলা ভাষার ইতিহাসের দিকে অর্থাৎ তার রাজনৈতিক ইতিহাসের দিকে নজর দেওয়া দরকার। টিকে থাকার স্ট্বার্থে বাংলাকে সবসময় লড়াই করতে হয়েছে। বাংলা সবসময় ব্রাত্যজনের ভাষা নিল্ফম্নবর্গের ভাষা হিসেবে থেকেছে। বাংলার সঙ্গে একসময় রাজদরবারের ভাষা ফার্সির দ্বন্দ্ব ছিল, সংস্ট্কৃতের দ্বন্দ্বও আমরা দেখেছি। সুতরাং একটি ভাষার সঙ্গে অন্য ভাষার সমঙ্র্ক যে আসলে ক্ষমতার সমঙ্র্ক, বাংলার ইতিহাস বিচার করলে সেটা বোঝা যায়। শুধু ক্ষমতার সমঙ্র্ক বললে হয় না, বলতে হয় অসম ক্ষমতার সমঙ্র্ক। এ অসম ক্ষমতার পুনরুৎপাদন আবার আমরা খেয়াল করি ব্রিটিশ উপনিবেশ প্রতিষ্ঠার সময়। তখন ইংরেজি গুরুত্দ্বপহৃর্ণ ভাষা, শাসকশ্রেণীর ভাষা এবং সাম্রাজ্যের ভাষা। তখন বাংলা আবার বিদেশি ভাষার অধীনস্টস্ন হলো। এ সময়েই বাংলা ভাষার রাজনৈতিক ইতিহাসে আরেকটা অনস্নর্দ্বন্দ্ব দেখা দিল। 1867 সালে ভাষা নিয়ে একটা বিতর্ক হয়। সে সময় হিন্দির সঙ্গে উদর্ুর দ্বন্দ্বের পরিপ্রেক্ষিতে উদর্ুকে ভারতীয় মুসলমানদের একমাত্র ভাষা করার কথা উঠেছিল। স্যার সৈয়দ আহমদ এবং মৌলভী আবদুল হকরা সেই ধ্বনি তুলেছিলেন। তখনও বাংলার কথা মোটেই খেয়ালে রাখা হয়নি। পাকিস্টস্নান আমলেও আবার বাংলাকে লড়তে হয়েছে। নিজের বিকাশের জন্য মর্যাদার জন্য তাকে প্রতিমুহহৃর্তে আধিপত্যকামী ভাষার সঙ্গে যুদব্দ করতে হয়েছে।

এ ব্যাপারে তথাকথিত বেঙ্গল রেনেসাঁসের প্রবক্তাদের মধ্যেও টানাপড়েন লক্ষ্য করা গেছে। একদিকে পাশ্চাত্য শিক্ষার দ্বারা প্রভাবিত হবার ব্যাপার, অন্যদিকে বাংলা ভাষায় তার চর্চা চলছিল। এই টানাপড়েনে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত যে সবসময় প্রগতিশীল ভূমিকা নিয়েছে তা নয়। ভাষা প্রশেম্ন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবস্ট্থান ছিল প্রগতিশীল। বাংলা ভাষাকে সামনে আনা ও সংস্ট্কার করার তাগিদ তিনিই এনেছিলেন। তার 'বর্ণপরিচয়' 'আদর্শিলিপি' এবং বাংলা ভাষায় সাহিত্য রচনার মাতৃভাষার প্রতি তার দায়বোধই প্রকাশ পায়। ইংরেজির সঙ্গে বাংলার দ্বন্দ্বে তার পক্ষপাত সঙ্ষদ্বভাবে বাংলার দিকে। কিন্তু তিনিও একটা পর্যায়ে এসে থেমে যান। তার পরে বগ্ধিকমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়-এর হাতে বাংলা ভাষার চর্চা ও উপন্যাসের ভিত রচনা হয়ছে। তবে সেখানেও দেখছি যে, ভাষা প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে উপনিবেশবাদ বিরোধিতার প্রয়োজন তিনি খেয়াল করছেন না। ভাষা যে সংগ্রামের ক্ষেত্র, এমনকি রাজনৈতিক মুক্তিসংগ্রামেরও ক্ষেত্র হতে পারে, ঊনবিংশ শতকে তার ওপর বেশি গুরুত্দ্ব দেওয়া হয়নি। '52 সালের ভাষা আন্দোলনে চূড়ায় এ বিষয়টিই উন্মোচিত হয়েছে।

ভাষা ও জাতীয়তাবাদের সমঙ্র্ক কি তখনই সামনে আসে?

বাঙালি জাতীয়তাবাদের যে চেতনা এবং যার মধ্যে একধরনের উপনিবেশবাদ বিরোধিতা থাকতে পারে, তা সীমাবদব্দভাবে হলেও আমরা লক্ষ্য করি ঈশ্বরচন্দ্রে, বগ্ধিকমে এবং আরো বেশি করে মধুসহৃদন দত্তের মধ্যে। তার 'মেঘনাদবধ কাব্যকে' বলা যেতে পারে ওই সময়ের জাতীয় মহাকাব্য। জাতীয়তাবাদের মধ্যে ভাষার ব্যাপারটি গুরুত্দ্বপহৃর্ণ। বিশেষত সেই জাতীয়তাবাদে যার মধ্যে উপনিবেশবাদবিরোধী উপাদান উদ্ঘাটনের ব্যাপার আছে। তাহলে আমরা দেখছি যে, ভাষা আন্দোলন এবং ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদের শুরুটা আরো আগে এবং সাহিত্য তাতে একটা গুরুত্দ্বপহৃর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

দেখা যাচ্ছে, রাষদ্ব্রের অভিভাবকত্দ্ব ছাড়া ভাষার পহৃর্ণ বিকাশ হচ্ছে না।অনেক ক্ষেত্রেই তো ভাষা রাষদ্ব্রের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দি্বতা করেছে, মর্যাদা দাবি করছে। আবার একইসঙ্গে উপনিবেশবাদের উপাদানগুলোকে নিজের মধ্যে পুনঃসৃষদ্বিও করেছে। অর্থাৎ ভাষার গতি একরৈখিক না যে, অত্যনস্ন নিরেট, সঙ্ষদ্ব ও সবল উপনিবেশবাদ বিরোধিতা আমরা পাব। মধ্যবিত্ত সমাজ নিজ শ্রেণীস্ট্বার্থেই ঔপনিবেশিক সমঙ্র্ককে টিকিয়েও রেখেছে। যার উদাহরণ বগ্ধিকমচন্দ্রের রাষদ্ব্রচিনস্না। তিনি যে রাষদ্ব্র কল্কপ্পনা করছেন সেটা কিন্তু ভাষাভিত্তিক নয়, সামঙ্্রদায়িক। তিনি জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা কিন্তু তার চিনস্নার মধ্যে পশ্চিম ভর করে আছে। পশ্চিম সভ্যতার জয়গানে তার রচনা ভরপুর। উপনিবেশবাদের মতাদর্শিক আধিপত্য ভাংবার লক্ষ্য তার সামনে ছিল না। '52-এর ভাষা আন্দোলনের চেতনার মধ্যে প্রথম এই পাল্কল্টা মতাদর্শিক আধিপত্যের আকাগ্ধক্ষা দেখতে পাই। যে মতাদর্শে অধিকাংশ মানুষ স্ট্থান পাবে, তাদের স্ট্বার্থই থাকবে যার কেন্দ্রে।

উনিশ শতকের গোড়ায় ভাষা সংস্ট্কারের মাধ্যমে যে প্রমিত বাংলা তৈরি হলো, তা উচ্চ বাংলা এবং নিল্ফম্ন বাংলা হিসেবে ভাষাকে বিভাজিত করল কি?

হঁ্যা, সেটা আসলেই বিভাজন তৈরি করেছে। তারও কারণ উপনিবেশবাদ। ঈশ্বরচন্দ্র, মধুসহৃদন ও বগ্ধিকম এই ত্রয়ীর কথা বলতে পারি। ভাষা ও সাহিত্যের যে রাজনৈতিক কাজ তা বোঝার জন্য এদের কাজের সঙ্গে উপনিবেশবাদের সমঙ্র্ক খেয়ালে রাখতে হবে, দেখতে হবে শ্রেণীর যোগাযোগ। ওই ত্রয়ী বিভিল্পম্ন সময়ে আলাদা আলাদাভাবে পশ্চিম সভ্যতার জয়গান গেয়েছেন। পশ্চিমা সভ্যতার অনেক আলোকিত দিক আছে কিন্তু তার যে বর্বরতার দিক_ সেটাকে তারা উন্মোচিত করেননি। তাই আমরা দেখেছি যে, বাংলা ভাষার মধ্যে সেই সভ্যতার চেতনা রোপিত করতে গিয়ে তারা ভাষাকে বিভাজিত করে ফেলছেন। চাকরের ভাষা চাষার ভাষা বনাম বাবুর ভাষা প্রভুর ভাষা, এরকম আদল দাঁড়িয়ে গেছে। নানারকম উচ্চ-নীচ বিভাজন তৈরি হয়েছে। সাহিত্যিক ভাষা বনাম অসাহিত্যিক ভাষা_ এটিও আরেকটি অসম ক্ষমতাসমঙ্র্ক। ভাষার ওপর রাজনৈতিক প্রভাবের ফলেই ভদ্রলোকী বাংলার সঙ্গে শ্রমজীবী কৃষক জনগোষ্ঠীর মুখের বাংলার এ দহৃরত্দ্ব। আনুষ্ঠানিক বাংলা এবং আঞ্চলিক বাংলার মধ্যেও এই অসম ক্ষমতার সমঙ্র্ক রয়েছে। অথচ যাকে আঞ্চলিক বলা হচ্ছে, তা-ই তো সত্যিকার 'জাতীয়'। জাতির সাংস্ট্কৃতিক জীবনের প্রাথমিক প্রকাশ তো সেখানেই ঘটে। তার থেকে বিচ্ছিল্পম্ন হলে ভাষা শেকড়ছাড়া, দুর্বল ও গণবিরোধী হয়ে পড়তে পারে। আমার আশগ্ধকা গত দশ-পনের বছরে এই প্রবণতারই বাড়বৃদব্দি হচ্ছে।

ভাষার অধিকার কীভাবে সামাজিক উল্পম্নতির ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে?

সংস্ট্কৃতি হচ্ছে বিভিল্পম্নমুখী আদর্শের প্রতিদ্বন্দি্বতার ময়দান। সেখানে একটা পর্যায়ে কোনো একটি আদর্শের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা হয়। এর সঙ্গে ভাষার চর্চার সরাসরি যোগ থাকে। ভাষা জনগণের সাংস্ট্কৃতিক সমঙ্দ। কিন্তু একে কে কীভাবে ব্যবহার করছে তার ওপর ভাষা ব্যবহারের চরিত্র দাঁড়ায়। ধরা যাক শিক্ষার কথা। শিক্ষার মাধ্যমে ভাষাকে সামাজিক ক্ষমতায়নে ব্যবহার করা যায়। ইংরেজির কথাই ধরুন। শাসকের ভাষা এবং সাম্রাজ্যবাদের ভাষা হিসেবে ইংরেজির দাপট এখন বিশ্বায়ন বা গোলোকায়ন মারফত বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠিত। অপরদিকে এশিয়া-আফিদ্ধকা-ল্যাটিন আমেরিকার সাবেক উপনিবেশিত দেশগুলোতে দু'ধরনের প্রবণতা আমরা শনাক্ত করতে পারি। এক দল শাসকের মতাদর্শ চর্চা করছে, আরেক দল শাসকের ভাষাকে উল্কেল্টা তাদের বিরুদব্দেই ব্যবহার করছে। যেমন উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকায় সঙ্্যানিশ একসময় ঔপনিবেশিক প্রভুর ভাষা ছিল। কিন্তু তৃতীয় বিশ্বের বড় এলাকায় সঙ্্যানিশ এখন নিপীড়িতের ভাষা। কাজেই একই ভাষাভাষীদের ঐতিহাসিক বস্ট্তুগত অবস্ট্থানের কারণে ভিল্পম্ন চরিত্র অর্জন করছে। সেটা সাহিত্যে যেমন, মুখের কথাতেও তেমন। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যবিত্ত-উচ্চবিত্তের কাছে ইংরেজি ভাষা সামাজিক অবস্ট্থান ও আত্দ্মপরিচয় নির্মাণের হাতিয়ার। অপরদিকে দক্ষিণ এশিয়া এবং ইউরোপ-আমেরিকাতেও এশীয় ইংরেজি লেখকদের আবির্ভাব ঘটছে। এদের কেউ কেউ ইংরেজিকে ব্যবহার করছেন ইংরেজির দাস হিসেবে নয়, কলকাঠি হিসেবে। কিছু নির্দিষদ্ব ঐতিহাসিক বস্ট্তুগত কারণে ইংরেজি তাদের কাছে এসেছে। সে কারণে প্রভুর ইংরেজি আর দাসের ইংরেজি এক নয়। কিন্তু বাংলাদেশে এমনও দেখা যায়, কেউ কেউ বাংলাদেেশর কাদা-মাটি-জলে বড় হয়ে কয়েক বছর বিদেশে কাটিয়ে ইংরেজিকেই একমাত্র ভাষা হিসাবে ব্যবহার করছেন। আমি মোটেই ইংরেজি চর্চার বিরুদব্দে না। আমার প্রশম্ন হচ্ছে, এই যে ইংরেজিকে সমীহ করা বা অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রবণতা, এর আদর্শিক ও রাজনৈতিক পক্ষপাতটি নিরীহ চরিত্রের নয়।

তাদের মনোজগতের নোঙর কি দেশের বাইরে পোঁতা?

খুব চমৎকার বলেছেন, তাদের মনোজগতের নোঙর দেশে নাই। এটা ইংরেজির সমস্যা না, সমস্যাটা মানসিকতার; যাকে আমি বলতে চাই ঔপনিবেশিক মানসিকতা। মধ্যযুগীয় কঠিন ইংরেজি তারা কষদ্ব করে পড়েন অথচ দেশে থেকেও বাংলা চর্চায় অমনোযোগী। আপনি ইংরেজি সাহিত্যে পড়ে আসা ছাত্র-ছাত্রীদের জিজ্ঞাসা করুন তো শাহ মুহাল্ফ্মদ সগীর কে আলাওল কে, বেশিরভাগই বলতে পারবে না। কিন্তু যদি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় কারা ইংরেজিতে লিখছে, জবাব পাবেন। এসব জানা দরকার কিন্তু নিজের ভাষিক সমঙ্দকে অবহেলা করা তো প্রকৃত বিদ্বানের কাজ নয়। উল্পম্নয়ন সাহিত্য নামে ইংরেজি নির্ভর একধরনের লেখালেখির বিস্টস্নার হচ্ছে।

এর ভূমিকা কী? এই উল্পম্নয়ন কার উল্পম্নয়ন?

যাদের উল্পম্নয়ন, তাদের জন্যই এটা তৈরি করা হয়। সে কারণেই তা ইংরেজিতে রচিত হয়। যদি তা দেশবাসীর উল্পম্নয়নের লক্ষ্যে হতো, তবে তাদের পড়বার মতো করে দেশীয় ভাষায় রচিত হতো। ইতালির তাত্তি্বক ও সংগ্রামী আনস্নোনিও গ্রামসি হেজিমনি বা মতাদর্শিক আধিপত্যের কথা বলেছেন। কেবল বলপ্রয়োগ বা বৈষয়িক পন্থা দিয়েই শাসন চলে না, শাসনের জন্য আদর্শিক প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত করে শাসিতের সল্ফ্মতি আদায়ের পন্থার কথা তিনি বলেছেন। যদি শাসিতকে বিশ্বাস করানো যায় যে, বাংলার চেয়ে ইংরেজি ভালো; যদি তার মনোজগতের ভেতর ঢুকিয়ে দেওয়া যায় যে, ইংরেজির মইয়ে চড়ে শ্রেণীগত অবস্ট্থানের উল্পম্নতি ও ক্ষমতা অর্জন করা যায় এবং ইংরেজিই প্রগতি ও আলোর বাহন, তবে তারা ইংরেজির দিকেই ছুটবে। দেশীয় ভাষা-সংস্ট্কৃতি অর্থাৎ বৃহত্তর জনগণ ও তাদের স্ট্বার্থ পেছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়ার চেষদ্বা হবে। তখন নিল্ফম্ন শ্রেণীর লোকজনও নিজ শ্রেণী ডিঙিয়ে যাওয়াকেই লক্ষ্য নির্ধারণ করবে।

সর্বস্টস্নরে শিক্ষার বিস্টস্নার ছাড়া ভাষার পহৃর্ণ মর্যাদা প্রতিষ্ঠা সল্ফ্ভব?

প্রথমত যে শিক্ষা কাঠামো তৈরি হয়েছে তাতে সর্বস্টস্নরে বাংলাকে বাধ্যতামহৃলক করলেও তা ইংরেজির কাছে পরাস্টস্ন হবে। কারণ কাঠামোটাই এমন যে, তার ওপর বাইরে থেকে বাংলাকে চাপিয়ে দিলে তা কার্যকর না-ও হতে পারে। যেমন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাথর্ীদের মধ্যে শ্রেণীগত ব্যবধান আছে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে কারা যায়, কেন যায়, তাদের টাকা কোথা থেকে আসে, এর একটা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পশ্চাৎ কারণও আছে। শ্রেণীবিভক্ত সমাজে যেমন এক শ্রেণী অন্য শ্রেণীর ওপর আধিপত্য করে, তেমনি এক ভাষাও অন্য ভাষার ওপর দাপট প্রতিষ্ঠা করে। ইংরেজি বাংলার ওপর, আর বাংলা চাকমা বা মান্দি ভাষার ওপর আধিপত্য করছে। সেজন্য শিক্ষা ব্যবস্ট্থার মধ্যে কাঠামোগত পরিবর্তন না হলে বাংলাকে সর্বস্টস্নরে প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। এ জন্য আমাদের সরকারগুলো কোনো ব্যবস্ট্থা নেয়নি। শুরু থেকে বিজ্ঞান, দর্শন, ইতিহাস, অর্থনীতিসহ জ্ঞানের সব শাখার গুরুত্দ্বপহৃর্ণ বইগুলো অনুবাদ করার ব্যবস্ট্থা থাকলে কিছুটা অগ্রগতি হতো। গত 35 বছরে এটাকে সাংস্ট্কৃতিক ধারায় পরিণত করা গেলে আজ বাংলাকে আরো ভালো জায়গায় দেখতে পেতাম। তার ফলে বিজ্ঞান, দর্শন ও সাহিত্যসহ সকল জ্ঞানের বিকাশ হতো। কিনস্ন এ লক্ষ্যে কেবল অনুবাদ সংস্ট্থাই যথেষদ্ব নয়, এর জন্য সামাজিক আন্দোলন দরকার। ভাষার সাত্যিকার বিকাশক্ষেত্র হচ্ছে জনসংস্ট্কৃতি। জনসংস্ট্কৃতির সত্যিকার বিকাশ ঘটে সত্যিকার গণতন্পে। যে গণতন্প মানুষকে প্রজা হিসেবে বিবেচনা করবে না, সমান মর্যাদার নাগরিক ভাববে। সে রকম একটি রাষদ্ব্রে ভাষাভাষীরা নিজেদের ভাষিক সমমদে বলীয়ান হয়ে নিজেদের সাংস্ট্কৃতিক জীবনে বিদেশি ভোগবাদী ও ব্যক্তিনির্ভর সংস্ট্কৃতির সংত্রক্রমণ প্রতিহত করতে পারবে। ভাষা মুক্ত না হলে যেমন মুক্ত মানুষ হয় না, তেমনি মুক্ত মানুষ ছাড়া মুক্ত সংস্ট্কৃতিও বিরাজ করে না। ভাষা প্রশম্ন এ কারণেই অতিমাত্রায় রাজনৈতিক। তাই ভাষার পহৃর্ণ প্রতিষ্ঠা যখন হয়নি, তখন ভাষার আন্দোলনও সমাপ্টস্ন হয়নি।বাংলাদেশে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠিত নয়। বিশ্বায়নের প্রভাবেও প্রানস্নিক ভাষা ও সংস্ট্কৃতি বিপল্পম্ন বলে একটা উদ্বেগ লক্ষ্য করা যায়।

ভাষা আন্দোলনের সহৃতিকাগারে এমন হলো কেন?

এই বিশ্বায়ন বলতে কী দুনিয়ার সাম্য বোঝানো হচ্ছে, নাকি বোঝানো হচ্ছে বিশ্বের আমেরিকায়ন?

বিশ্বায়নের নামে যে সংস্ট্কৃতির প্রাধান্য দেখা যাচ্ছে, সেটা তো মার্কিন সাংস্ট্কৃতিক আগ্রাসন। এটা নিয়ে প্রশম্ন তোলা দরকার। সে জন্যই বলেছি, ভাষা সমঙ্র্ক হচ্ছে ক্ষমতার সমঙ্র্ক। একটা ভাষা আরেকটার সঙ্গে নিরীহভাবে থাকে না। একটা আরেকটাকে প্রভাবিত করে, নিয়ন্পণ করতে চায়। সংষ্ফ্কৃতির ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার। এটা ঘটে রাজনীতির মধ্যস্ট্থতায়। তাই ভাষাকে কীভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে সেটা খেয়াল করতে হবে। ভাষার মধ্যে কী চিনস্না ধ্যান-ধারণা, রুচি ও আদর্শ সঞ্চারিত হচ্ছে, তার ওপর নির্ভর করে ভাষার রাজনৈতিক চরিত্র। বাংলাদেশে যে নাগরিক মধ্যবিত্তীয় সংস্ট্কৃতি তৈরি হয়েছে তার মধ্যে গণতান্পিক ও প্রগতিবাদী উপাদানের ঘাটতির কারণেই এই ভাষা দিয়ে দুর্বল জাতির ভাষার ওপর আধিপত্য করানো সল্ফ্ভব হচ্ছে। আবার এর জন্য এই ভাষা ও সংস্ট্কৃতির মধ্যেকার মানবতাবাদী, ইতিবাচক ও সমুহবাদী উপাদানগুলোকে সচেতনভাবে চাপাও দেয়া হচ্ছে। '52-র আন্দোলন গ্রামাঞ্চল তো বটেই এমনকি শহরের শ্রমজীবী জনসাধারণকেও আলোড়িত করেছিল।

এটা কীভাবে সল্ফ্ভব হলো?

1948 সালে যখন প্রথম ভাষা নিয়ে আলোড়ন তৈরি হয়, তখন সেটা ছিল মধ্যবিত্তের আন্দোলন। কিন্তু 1952 সালে শুধু ছাত্রছাত্রী বা মধ্যবিত্তই না সেখানে কৃষক-শ্রমিকরাও জড়িত হয়। এ ব্যাপারে বদরুদ্দীন উমরের গবেষণাকে আমি গুরুত্দ্বপহৃর্ণ মনে করি। তিনি দেখিয়েছেন, কীভাবে এবং কেন এটা বড় গণআন্দোলনে রূপানস্নরিত হয়েছে। ভাষা প্রশম্ন এখানে তার নির্দিষদ্ব সীমিত বৃত্ত অতিত্রক্রম করে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রশেম্ন অর্থাৎ দাবিতে রূপানস্নরিত হয়েছে। এমনি মাত্রায় যে, '52-তে ভাষার অধিকারের প্রশম্ন শ্রেণীর অধিকারের প্রশম্ন পর্যনস্ন উল্পম্নীত হয়েছে এবং সাধারণ জনগণকে তা সঙ্র্শ করতে পেরেছে। যার ফলে ভাষা আন্দোলনে কৃষক-শ্রমিকের অংশগ্রহণ ছিল। তারা মনে করছিল, অধিকাংশ মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া মানে তাদের অধিকার কেড়ে নেওয়া। এই অর্থে ভাষা আন্দোলন আমাদের প্রথম জাতীয় আন্দোলন যেখানে সমগ্র জাতি একত্রিত হতে পেরেছিল। তাই ভাষা আন্দোলনকে এখন যে রকম প্রায় অরাজনৈতিক আন্দোলন বলে চিত্রিত করা হয় তা মেনে নিতে পারি না। ভাষার অধিকারকে অন্যান্য অধিকারের সঙ্গে একত্রেই বুঝতে হবে।

অবরুদব্দ অবস্ট্থায় বাংলা ভাষার চিনস্না-দর্শন-সাহিত্যে যে সৃজনশীলতা ছিল স্ট্বাধীন বাংলাদেশে তাতে মন্দাভাব দেখা যাচ্ছে কেন?

কারণ স্ট্বাধীন বাংলাদেশে স্ট্বপম্নভঙ্গ হয়েছে। একটা শ্রেণী যখন নিজেকে বিকশিত করতে পারে না, জাতীয় বৈষয়িক ও আদর্শিক বিকাশের পথনির্দেশ করতে পারে না তখন সে-ই হয়ে দাঁড়ায় গণতন্প ও মুক্তির বাধা। '71-এর আগে তাদের একটা আদর্শ ছিল। যার মধ্যে জনগণের বড় অংশ নিজেদের অধিকার আদায়ের সল্ফ্ভাবনা দেখতো। এখন তারা আর সেই ভূমিকায় নেই। এদের সঙ্গে সমঙ্র্কিত বুদব্দিজীবীরাও যখন একই রকম আদর্শিক দেউলিয়াত্দ্বে ভোগেন তখন তাদের পক্ষেও সৃজনশীল ও বুদব্দিবৃত্তিক বিকাশ ঘটানো সল্ফ্ভব হয় না। ভাষা চরিত্রগতভাবে গণতান্পিক। কেউ একা একা বা গোষ্ঠীগতভাবে ভাষা চর্চা করতে পারে না। ভাষা বেঁচে থাকে বৃহত্তর জনগণের মুখে ও হূদয়ে। তা যদি আধিপত্যমুক্ত না হয় তবে ভাষারও মুক্তি হয় না। বাংলা ভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করা মানে গণতন্পকে প্রতিষ্ঠা করা। সে কারণে ওই শ্রেণী যখন গণতন্পবিরোধী অবস্ট্থানে চলে গেল, আপনাআপনি তারা ভাষারও বিরুদব্দে চলে গেল। অন্যদিকে অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে যে ভাষার দাপট, চিনস্নার ক্ষেত্রেও তারই দাপট সাধারণত দেখা যায়। আমাদের দেশে তথা গরিব দুনিয়ায় নিজস্ট্ব ভাষার সেই দাপট না থাকায় তা পরাস্টস্ন হচ্ছে। গত 36 বছরে তিলে তিলে তিলোত্তমা করে আমরা যে রাজনৈতিক সংস্ট্কৃতি গড়ে তুলেছি, সেই রাজনৈতিক সংস্ট্কৃতিতে কয়েকটি পরসঙ্র সমঙ্র্কিত প্রবণতা লক্ষ্য করি; একটি হচ্ছে রাজনীতির বাণিজ্যকীকরণ এবং বাণিজ্যের রাজনীতিকরণ। আমরা দেখেছি, রাজনীতির সামরিকীকরণ এবং সামরিক বাহিনীর রাজনীতিকীকরণ। আমরা দেখেছি আমলাতন্পের রাজনীতিকরণ এবং রাজনীতির আমলাতন্পায়ন। আমরা দেখেছি ধর্মের রাজনীতিকরণ এবং রাজনীতির ধমর্ীয়করণ। আমাদের রাজনৈতিক সংস্ট্কৃতির এই চারটি প্রবণতা পরসঙ্র সমঙ্র্কিত। এই সংস্ট্কৃতিতে ভাষার সুষ্ঠু বিকাশ সল্ফ্ভব নয়। এই সংস্ট্কৃতিতে একুশ পালিত হয় শোক দিবস হিসেবে, অথচ এটা ছিল প্রতিরোধের দিবস। একুশের এই প্রতিরোধ চেতনাকে আজ দ্রবীভূত করে বিলীন করা হচ্ছে। একুশ এখন জাতীয়তাবাদী রোমান্টিসিজম আত্রক্রানস্ন। এই অবস্ট্থায় এর আবেগের ধারা শুকিয়ে যাওয়াটাই স্ট্বাভাবিক। রাষদ্ব্র কিন্তু ত্রক্রমাগতভাবে জনগণের সংগ্রামী চেতনা এবং তার স্ট্মারক ও প্রতীককে আত্দ্মসাত করে। স্ট্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে তার ধার ও চেতনাকে প্রশমিত করে নিজের কাজে লাগায়। এমনকি শক্তিকে সংহত করার স্ট্বার্থে প্রতিরোধকে প্রতীকি দিবসে পরিণত করে। রাষদ্ব্র বা শাসকশ্রেণী এভাবে জনগণের রাজনৈতিক সঙ্ৃহাকে ত্রক্রমাগত বিরাজনৈতিক করে, তাকে আড়ল্ফ্বরসর্বস্ট্ব করে জনজীবন থেকে বিচ্ছিল্পম্ন করে। এভাবে 21 ফেব্রুয়ারির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ, আত্দ্মসাৎকরণ ও বিরাজনীতিকীকরণের মাধ্যমে এ দিবসটির প্রতিরোধী চরিত্রকে দুর্বল ও অবলুপ্টস্ন করে দিতে সক্ষম হয়েছে। বলা হয়, স্ট্বাধীন রাষদ্ব্র জাতীয় ভাষার বিকাশে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে।

তারপরও কেন বাংলা আত্রক্রানস্ন?

তাবৎ জনগোষ্ঠীর ভাষিক সমঙ্দ ও ভাষিক ঐতিহ্য কিন্তু কেবল সাহিত্য ধারণ করতে পারে না। তার জন্য ভাষার রাষদ্ব্রীয় ও সামাজিক-সাংস্ট্কৃতিক প্রতিষ্ঠা চাই। কিন্তু আমি আগেই বলেছি, বাংলাদেশের যে রাজনৈতিক ক্ষমতাসমঙ্র্ক ও রাজনৈতিক সংস্ট্কৃতি তাতে জনগণের আর সব সমঙ্দের মতো ভাষা ও ভাষিক সমঙ্দও নিরাপদ নয়। জনগোষ্ঠীর ভাষা চর্চার সামগ্রিকতা রক্ষার কাজ সাহিত্য বা লিখিত ভাষা একা পারে না। যদি জনগণের বড় অংশই শিক্ষা ও সমঙ্দ থেকে বঞ্চিত হয় তবে কিভাবে তারা ভাষার ওপর অধিকার কায়েম করবে? পশ্চিমবঙ্গে বাংলা রাষদ্ব্রমর্যাদায় আসীন নয়। সেখানেও বাংলা হিন্দি ও ইংরেজির সঙ্গে লড়ছে। লড়াইরত থাকার কারণে ভাষা বিকাশের ক্ষেত্রে তাদের যে পদক্ষেপ আছে সেটা আমাদের এখানে নেই_ রাষদ্ব্র থাকা সত্ত্বেও। আমি বলছি না কে এগিয়ে আছে আর কে পিছিয়ে আছে। কেউ কেউ বাংলাদেশকে বিশ্বের কোটি কোটি বাংলাভাষীর সাংস্ট্কৃতিক বা ভাষিক রাজধানী বলেন।

কিন্তু তা হওয়ার জন্য যা যা করা দরকার তা কি আমরা করেছি?

আমি প্রশম্ন করছি, '71-এর পর গুটিকয়েক উপন্যাস ছাড়া তেমন বড় মাপের কাজ কী হয়েছে? কবিতার ক্ষেত্রে কি বড় বাঁকবদল লক্ষ্য করছি? সমালোচনা সাহিত্যে এখনও আমরা অনেক পেছানো। বাংলায় দর্শন চর্চার অগ্রগতি কতটা? সব ক্ষেত্রেই আমরা সামনস্নবাদী ও ঔপনিবেশিকতাবাদী অসম ক্ষমতা সমঙ্র্কই উৎপাদন ও পুনরুৎপাদন করে চলেছি। তাই আমি ভাব গদগদ হয়ে বলতে পারছি না যে, বাংলাদেশ বাংলা ভাষার রাজধানী হবার যোগ্য।

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

ধন্যবাদ।

সূত্রঃ
http://www.shamokal.com/archive.details.php?nd=2007-02-23&nid=52640

আজফার হোসেন একাধারে প্রাবল্পিব্দক, গবেষক এবং শিক্ষক। প্রায় 11 বছর মার্কিন যুক্তরাষট্রে অবস্থানের পর সমপ্রতি দেশে ফিরেছেন। তিনি ওয়াশিংটন সটেট বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনায় জড়িত। এর আগে অধ্যাপনা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। যুক্তরাষট্রের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি অতিথি অধ্যাপকের দায়িত্দ্ব পালন করেন। তিনি ফুলব্রাইট ফেলোশিপ নিয়ে যুক্তরাষট্রে যান এবং সেখানে 10 বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করে 'ডিসটিংশান' নিয়ে ইংরেজি সাহিত্যে এমএ ও পিএইচডি অর্জন করেন। শিক্ষকতা, গবেষণা ও থিসিস রচনায় রেকর্ড ভঙ্গকারী একাডেমিক সাফল্যের জন্য তাকে ব্ল্যাকবার্ন ফেলোশিপে ভূষিত করা হয়। তার গবেষণার বিষয় উত্তর ঔপনিবেশিক সাহিত্য, সংস্কৃতিতত্ত্ব ও রাজনৈতিক অর্থনীতি। বর্তমানে তিনি ঢাকার নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনায় জড়িত আছেন। আনতর্জাতিক স্তরে তার বহুবিধ প্রকাশনা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দুটি সমপাদিত গ্রন্থ এবং আরো দুটি গ্রন্থ রাউটলেজ থেকে প্রকাশিত হতে যাচ্ছে

আর মাত্র কিছুক্ষণ পর 12:01...

মাথা নোয়াবে সমস্ত জাতী মহান ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে...

আজ সারা বিশ্ব জুড়ে পালিত হবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস.... আমি ও আমরা... হৃদয়ের গভিরের লুকানো ভালোবাসা ... তোমরা কি জানো? এই ভালোবাসা কাদের জন্য?

সালাম, বরকত, রফিক... তোমরা তোমার মায়ের মুখের কথা ফিরিয়ে দিয়েছো... আমার মুখের প্রতিটি শব্দ... তোমাদের তৈরী... এই ভালোবাসা তোমাদের জন্য...

21 আমার প্রথম আর্তচিৎকার...
21 আমার মুষ্টিবদ্ধ প্রথম প্রতিবাদ...
21 আমার রক্তে লেখা প্রথম বীরগাঁথা...
21 আমার অস্তিত্ত্বের প্রথম শিকড়....

তোমাদের লাল সালাম

ভালই শুর হয়েছিল দিনটা...

হঠাৎ দুপুরের পর থেকে ক্যান জানি কোন কিছুই ভালো লাগছো না... কিছুই বুঝতেছিনা... কোন সমস্যাও খুজে পাচ্ছিনা... নাকি মনে করতে চাচ্ছিনা? মাঝে মাঝে সব কিছু এলোমেলো লাগে... কোন কিছুই আর ভালো লাগেনা... একটা কষ্ট এমন ভাবে আকড়ে ধরে যে.. ঠিক মতো ঢোক গিলতে পারি না... গলায় কি যেন আটকে যায়...

বড়ই ক্লান্ত লাগে এভাবে জীবনকে বয়ে বেড়াতে... এর কি কোন সমাধান নেই?

'দুহূঁ কোরে দুহূঁ কাঁদে বিচ্ছেদ ভাবিয়া

আধাতিল না দেখিলে যায় যে মরিয়া

সখি কেমনে বাঁধিব হিয়া'

ভালোবাসা কি?

হাপো থ্যালামাসের কারসাজি মসত্দিস্কের একটা অংশ হল, সেরিব্রাম বা ফোরব্রেন, যাকে বাংলায় বলে অগ্রমসত্দিষ্ক। সেখানে থেকে ছোট্ট একটা গ্রন্থি, হাইপোথ্যালামাস। এর কাজ পিটুইটারি গস্ন্যান্ডকে উদ্দীপ্ত করা। পিউবার্টিতে পেঁৗছানোর সঙ্গে সঙ্গেই হাইপোথ্যালামাস সক্রিয় করে তোলে পিটুইটারিকে। ফলে শরীরে প্রবাহিত হয় গ্রোথ হরমোন। মেয়েদের ক্ষেত্রে সাধারণত এগারো-বারো এবং ছেলেদের ক্ষেত্রে তেরো-চৌদ্দ বছর বয়সে এরপ্রবাহ সবচেয়ে বেশি।

=> তারমানে আমি কি কাউকে ভালোবসতে পারবো না?

গড় আয়ু চার বছর আধুনিক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রেমের গড় আয়ু চার বছর। হেলেন ফিশার দেখিয়েছেন, আদিমকালেও নর-নারীর মিলন, সনত্দান জন্ম, বড় হওয়ার চার বছরের মাথায় নতুন সঙ্গী খুঁজতে হতো। বর্তমানেও দেখা গেছে চার বছরের মাথায় বিবাহ-বিচ্ছেদের হার সবচেয়ে বেশি।

=> এইটা ভালো লাগছে... সংগৃহীত

দ্যাশের তথাকথিত বিবৃতিজীবিরা আবার সরব হইয়া উঠিয়াছেতাহারা হঠাৎ করিয়া "যথা শীঘ্রই নির্বাচন দিতে হইবে" নামক সভা সেমিনার সিম্পোজিয়াম করিবার জন্য ডায়াবেটিস/প্রেসার হাই করিয়া ফেলিতেছে। এহেন ঘ্যানি মানুষ্যগণের আচরণে জনগন পুলকিত বোধ করিতেছে। এই সেমিনার গুলা কালোটাকায় আয়োজিত বলিয়া দুষ্টজনেরা পিছনে মুখ টিপে হাসিতেছে। আরে টাকা তো টাকাই। তাই না? তাহার আবার কালো সাদা কি?

শুক্কুর আলী পত্রিকা পড়িয়া হাসিয়া কুটি কুটি হইয়া যাইতেছিলো

ক্যান?

নির্বাচন দেও। বেবাকতেরি একি টোন।

ক্যান?

নির্বাচন হইলেই ক্ষমতায় যাওন যাইবো।

আহা কি সুখদ্যাশটারে আবার লুইট্যা পুইট্যা খাইতে পারিবো

কোডায় জানি কইয়া গেছিলো "আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে" আহা মানুষটা কত্তদুর পর্যন্ত দেকছিলো। নাইলে এরম একখান ডায়লগ মারছিলো ক্যামতে?

নির্বাচন হইবো। 100 টাকা পাইয়া কুদ্দস আবুলরা খুশিতে বগল বাজাইতে বাজাইতে ধানের শীষ/নৌকা/লাঙ্গল-এ ভোট দিয়া নিজের সাংবিধানিক অধিকার বেচন দিবো। আর এই অধিকার কিন্যা 300টা জানোয়ার এক লগে চিল্লা ফাল্লা কইরা গলা পরিষ্কার করবো।

শুক্কুর আলী ভাবে আহা বেবাকতেরে যদি ধইরা চোতরা পাতা দিয়া কতডি বাড়ি দেওন যাইতো... কি যে সুখ হইতো...

ধুরো যাইগা। অহন রাস্তায় বইয়া কিছু বেচন যায়না। মাতায় লইয়া লইয়া মহল্লায় ঘুরন লাগবো। সব মরা এই গরীবের লগেই। আজাইরা... শুক্কুর আলী আওয়াজ দ্যায়.. .. তরকারী.. আলু পটল ফুলকফি বাধাকফি টমাটো রাখবেনননননন.. .. .. ..

রাত 12:19। ডাক্তার বল্লো "কে রক্ত দেবে? তারাতারি আসতে বলেন। রোগীর রক্ত লাগবে।" পকেট থেকে সেল ফোনটা বের করলাম। রিং করার চেষ্টা করলাম 1 বার 2 বার 3 বার ... এভাবে 12:57 পর্যন্ত অবিরাম চেষ্টা করলাম। না, কোন ভাবেই রিং করতে পারছি না। সার্ভিস নট এভেইলেবল। যাকে রক্তদিতে আসতে বলবো তার নাম্বার ও গ্রামীন ফোনের। এই কোম্পানীর 30 পয়সা মিনিটের বদৌলতে আমার তখন খুশিতে বগল বাজাতে ইচ্ছা করছিলো।



জনগণকে সুবিধা দেয়ার নামে এভাবে কষ্ট না দিলেই কি নয়? এতই যদি ভালোবাসার উদগরনে ছলাৎ ছলাৎ করে তাহলে সামর্থ বাড়িয়ে নয় ক্যান? বিল তো যথাসময়ে পরিশোধে না করলে ভালোবাসার অন্যরকম চেহারা দৃষ্টিগোচর হয়। তাহলে ক্যান আমি লাইন রেন্ট দিচ্ছি যদি আমার প্রয়োজনের মুহুর্তে কোন সংযোগ না পাই?



ইদানিং ল্যান্ড লাইন থেকে ইনকামিং ফ্রি করা হয়েছে বলে ঘোষনা দেখছি সংবাদপত্রে। ঘোষনার পর থেকে আমার ফোনে ল্যান্ড লাইন থেকে কানেক্ট করতে পেরেছে কিনা আমি মনে করতে পারছি না। যদি অসুবিধা সৃষ্টি করার নাম সুবিধা হয় তাহলে এই সুবিধা আমার প্রয়োজন নেই। যখন কসাই এর মত 6.90 পয়সা করে প্রতিমিনিট কলরেট ছিলো তখন যদি সেল ফোন এফোর্ট করতে পারি তাহলে এখনো পারবো। প্লিজ সুবিধার নামে এই ধরনের ভন্ডামী বন্ধ করুন।

রাত 12:19। ডাক্তার বল্লো "কে রক্ত দেবে? তারাতারি আসতে বলেন। রোগীর রক্ত লাগবে।" পকেট থেকে সেল ফোনটা বের করলাম। রিং করার চেষ্টা করলাম 1 বার 2 বার 3 বার ... এভাবে 12:57 পর্যন্ত অবিরাম চেষ্টা করলাম। না, কোন ভাবেই রিং করতে পারছি না। সার্ভিস নট এভেইলেবল। যাকে রক্তদিতে আসতে বলবো তার নাম্বার ও গ্রামীন ফোনের। এই কোম্পানীর 30 পয়সা মিনিটের বদৌলতে আমার তখন খুশিতে বগল বাজাতে ইচ্ছা করছিলো।

জনগণকে সুবিধা দেয়ার নামে এভাবে কষ্ট না দিলেই কি নয়? এতই যদি ভালোবাসার উদগরনে ছলাৎ ছলাৎ করে তাহলে সামর্থ বাড়িয়ে নয় ক্যান? বিল তো যথাসময়ে পরিশোধে না করলে ভালোবাসার অন্যরকম চেহারা দৃষ্টিগোচর হয়। তাহলে ক্যান আমি লাইন রেন্ট দিচ্ছি যদি আমার প্রয়োজনের মুহুর্তে কোন সংযোগ না পাই?

ইদানিং ল্যান্ড লাইন থেকে ইনকামিং ফ্রি করা হয়েছে বলে ঘোষনা দেখছি সংবাদপত্রে। ঘোষনার পর থেকে আমার ফোনে ল্যান্ড লাইন থেকে কানেক্ট করতে পেরেছে কিনা আমি মনে করতে পারছি না। যদি অসুবিধা সৃষ্টি করার নাম সুবিধা হয় তাহলে এই সুবিধা আমার প্রয়োজন নেই। যখন কসাই এর মত 6.90 পয়সা করে প্রতিমিনিট কলরেট ছিলো তখন যদি সেল ফোন এফোর্ট করতে পারি তাহলে এখনো পারবো। প্লিজ সুবিধার নামে এই ধরনের ভন্ডামী বন্ধ করুন।

আবার ভোট আইতাছে...

দুই নেত্রীর পদ-ধুলি লইয়া দেশের শীর্ষ স্থানীয় চোর বাটপারগন দাত ক্যালাইয়া হাসতে হাসতে আমাগো ভোটে নির্বাচিত হইয়া মানিক মিয়া এ্যাভিনিউস্থ গরুর খোয়ারে উপবিষ্ট হইয়া শুল্ক মুক্ত গাড়ি ক্রয়ে একমত হইবো... 330টি চোর একযোগে ভোট দিবো যখন দেখা যাইবো তাগো বেতন ভাতা বাড়ানোর বিল উত্থাপিত হইয়াছে... এহাছাড়া আর কোন টাইমে একমত হইতে দেখা যাইবো না... অবশ্যই নিয়ম ও নাই... আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাশে... বিরোধী দলের নেতার পোলা মাইয়াগো মইদ্যে সাদী মুবাররক সম্পন্য করন যাইবো... কিন্তু দেশের স্বার্থে একলগে বহন যাইবো না... ইভেন চাওন ও যাইবোনা... যদি চোক্কে প্যাচ লাইগ্যা যায়... মজার না? বড়ই সৌন্দর্য্য...

আহেন এই সকল তথাকথিত তেনা (নেতা) গো ধইরা "বাঙলা ফ্রাই" করি... খাওয়া ভবন আরক্ষুধা সদন রেস্টুরেন্ট এ এইসকল ফুড আইটেম বেচনের বন্দোবস্ত রাখার কঠি্ঠন দাবি করতাছি...

1. দ্যাশের যা অবস্থা... মনে হয় খলেদা হাসিনা কেউ ছার দিবো না... কি করা? যেহেতু গদ্দি লইয়া টানা টানি... তাইলে 2টা গদ্দি বানাইয়া 2জনরে বসাইয়া 2টা লেমেনচুস ধরাইয়া দেয়া অতি জরুরী...

2. যদিও এই প্রস্তাবটা একটু ব্যাকডেটেড... স্থান হবে ঢাকার বাইরে... হতে পারে কোন এক বনে অর কোন এক চর এ.... একটা বড় প্রসাদ করা হোক... সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর দিন সকাল 10টায় যেই দল ওই বাড়ির দখল নিতে পারবো... সেই দল নেক্সট 3 বছর-এর জন্য দেশের ক্ষমতায় থাকবো...

3. আগামী 5 বছরে যে এই ব্লগ এ সবচাইতে বেশী লেখা পাঠাইবো... তারে আমাগো দ্যাশের প্রাইম মিনিসটার বানানো হউক...

এক্কেবারে নয়া একখান লেক্সাস কিনছে এক পাবলিক তো.. হেয় তার জিএফ এর লইয়া লং ড্রাইভে বাইর হইছে... গাড়ীডা আছিলো ভয়েজ এনবল... যা কইবেন তাই শুনব টাইপ এর... জিএফ গাড়ি দেইক্যা পুরা টাশকি... বিএফ রে কইলো জানুএকটা রবি ঠাকুর এর গান শোনাও না .. পিলিজজজজ... তো বিএফ কইলা রবিন্দ্র সংগীত... সাথে সাথেই রবীন্দ্র সংগীত বাজা শুরু হলো... জিএফ দেখলো একটু ঝিমুনি আইতাছে.. কইলো জানু একটা হেবি্ব মেটাল শোনাও... যেই কথা সেই কাজ... হেবি্ব মেটালের ছন্দে তারা দুইজনেই ছন্দায়িত হইয়া যাওয়ার এক পর্যায়ে উলটা দিক থিক্কা আসা একটা গাড়ির সাথে লাগতে লাগতে ক্রস করার এক পর্যায়ে বিএফ বলে উঠলো ...রাবিশ!! আর সাথে সাথে অডিও প্লেয়ারে বেজে উঠলো আমাদের আইজুদ্দিন এর ভাষন....

ভাইসকল মাইণ্ড খাইয়েন না...

হুদাই মজা করলাম...

দিন কয়েক আগে আমার প্রিয় এক বন্ধুর বাবাকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলাম। তিনি হৃদযন্ত্রের জটিলতায় ভুগছিলেন। ফেরার সময় বন্ধুটি বলেস্না "ওকেইজ দোসত্দ... নেট এ দেখা হবে"। সেই তখন থেকেই এই প্রশ্নটা মাথার মধ্যে ঘুর-পাক খাচ্ছে। কোথায় যাচ্ছি আমরা? আর কতো বদলাবো আমাদের জীবন ধারনের স্টাইল? এখন কারো সাথে সরাসরি দেখা হওয়ার দরকার হয়না। মেসেঞ্জারে এ্যড করা আছে। যে যখন আসে দেখা হয়.. কথা হয়.. এক সাথে অনেক বন্ধুর আগমনে জনসভার (কনফারেন্স) সৃষ্টি হয়... কত্তোকি...নেট এর বদৌলতে ঘড়ে বসেই জাম্পেশ আড্ডার আয়োজন হয়ে যায় পৃথিবীর যেই প্রানত্দেই থাকিনা কেন। ওয়েব ক্যাম এর বদৌলতে রিয়েল লাইফ ফিলিংসটা বাড়তি পাওয়া... একটা সময় আড্ডাতে অত্যাবশ্যকীয় ছিলো মুড়ি ভাজা আর ধুমায়িত চা ... আহ.. কত্যোদিন এই সুবাস টা পাই না... খুউব মিস করি... আচ্ছা মান্নাদে যদি আগে বুঝতে পারতো পৃথিবীর এই সিচুয়েশন হবে... কফি হাউজে আর আড্ডা জমবে না... সেই 7 জন বন্ধুকে ঘরে বসেই ধরা সম্ভব... তাহলে তার গান টা ক্যামন হতো? আদৌ কি এমন একটা গান আমরা পেতাম?মুখে কথা বলাটা সেই কবেই শেষ হয়ে গেছে... না ভরকাবেন না... আমি শব্দ প্রতিবন্ধী না... আসলে বদলে গেছে কথা বলার ধরন... এখন কথা হয় ইমেইল এ, কথা হয় ইয়াহু/এমএসএন/স্কাই পি/এমআইআরসি/আওল/আইসিকিউ-তে... এখন আর মুখে কোন কথা বলা লাগে না... কথা হয় আঙ্গুল দিয়ে... আমার সমসত্দ আবেগ, অনুভুতির দৃশ্যমান হয় হাতের দশটি আঙ্গুলের মাথা থেকে... ইমোটিকন এর মাধ্যমে... আরো কত্তোকি যে দেখবো... বাল্যকারে পাড়ার লাইব্রেরীতে গেলে অনেক বইএর ভিড়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলতাম। কোন একটি বিশেষ বই এর জন্য সমসত্দ লাইব্রেরী তন্ন তন্ন করে খুজতাম। আর আজ? ঘরে বসে দেশ বিদেশের বিখ্যাত বই/জার্নাল/রিপোর্ট/এনসাইক্লোপিডিয়া কয়েকটি আঙ্গুলের আলতো ছোয়ায় নিমিশেই হাজির করে ফেলছি। এই তো কিছুদিন আগেও বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমান লাইব্রেরীটা কখন মহলস্নায় আসবে আর সদ্য সমাপ্ত বইগুলো বদল করে নতুন কিছু বই নিবো। সময় পেলেই মহানগর পাঠাগার এ ও যাওয়া হতো। কত্তো স্মৃতীবিজরীত বৃটিশ কাউন্সিল। অথচ এখন? ছোট্ট এই যাদুর বঙ্টা সব কিছু কি দ্রম্নত গতিতে বদলে দিচ্ছে। কিন্তু পাচ্ছিনা সেই নতুন বইয়ের গন্ধ... যেটা বই এর সাথে অনত্দরের একটা টান তৈরী করতো। সেই প্রশ্নটা আবারো চলে আসছে.. আসলে এর শেষ কোথায়? আর কতো বদলাতে হবে নিজেকে? প্রযুক্তির এই দ্রম্নত সম্প্রসারণে আমাদের অনুভুতীগুলো কি ভোতা হয়ে যাচ্ছেনা? আমার একটা কাজিন ইংলিশ মিডিয়ামের ক্লাস থ্রিতে পরে... সে ঊনসত্তর/ঊনত্রিশ কতো-তে হচ্ছে সে জানে না... ইংরেজী মাধ্যমের একটা অংশ বের হচ্ছে বিকৃত উচ্চারনে কথা বলতে বলতে। নিজ দেশে প্রবাসী? মনটা খারাপ হয়ে গেলো... আর লিখতে ইচ্ছা করছে না... কেউ যদি কষ্টকইরা এই পর্যনত্দ আইসা থাকেন... তাইলে আপনেরে ধন্যবাদ... ভালো থাইক্যেন

বস্তাবন্দি

Powered By Blogger
Subscribe to Feed